ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০

চাঞ্চল্যকর টিপু হত্যার চার্জশিট দাখিল

আওয়ামী লীগের ৩৩ জন জড়িত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ৫ জুন ২০২৩

আওয়ামী লীগের ৩৩ জন জড়িত

জাহিদুল ইসলাম টিপু

শত কোটি টেন্ডার বাণিজ্য ও ভর্তি বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয়। এর হত্যার নেপথ্যে ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর। ঘটনার দুই মাস আগে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। রাজধানীর দুটি রেস্তোরাঁয় বসে হত্যার নীলনক্সা তৈরি করা হয়।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থানরত পলাতক দেশের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ ও জাফর আহমেদ ওরফে মানিকের নির্দেশে টিপুকে হত্যা করা হয়। এই হত্যায় সঙ্গে জড়িত  ক্ষমতাসীন দলের ৩৩ জনের নামে উঠে এসেছে। সোমবার তাদের অভিযুক্ত করে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। আগামী ১৫ জুন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ও তিন সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নিহত টিপুর পরিবার অভিযোগ করেছে, হত্যাকা-ে জড়িত কাউন্সিলর মনসুর ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম আশরাফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। অনেক আসামি তাদের হুমকি দিচ্ছে। হত্যাকা-ের জড়িত অনেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। 
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগপত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছে- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ঘাতক সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে  সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, কিলার নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। আমাদের কোট রিপোর্টার  জানান, ৩৩ জন  আসামির মধ্যে ২৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এদের মধ্যে মুসা, শূটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। 
গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরে জনাকীর্ণ রাস্তায় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে রিক্সাযাত্রী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান ওরফে প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় নিহত টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে শাহাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

টিপুর হত্যাকাণ্ডের পর পরই র‌্যাব ও পুলিশ মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে হত্যার পরিকল্পনাকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার মুসাকে মধ্যপ্রাচ্যের ওমান থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে ডিবি পুলিশ। পরে তাকে তিন দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর কিলার মুসা, শূটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ও নাসির উদ্দিন ওরফে মানিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
টিপু হত্যা মামলায় তিন আসামি ওমান থেকে ফিরিয়ে আনা শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার মুসা, শূটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়া সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন একজন। এই হত্যাকাণ্ডে দুটি অস্ত্র ব্যবহার হয়। এর একটি ছিল ইশতিয়াকের, আরেকটি সৈকতের কাছ থেকে নিয়ে শামীমকে দেওয়া হয়। ইশতিয়াকের পল্টনে অস্ত্র-গুলির দোকান রয়েছে। হত্যাকারীরা তার দোকান থেকেই গুলি সংগ্রহ করেছিল।
এদিকে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার কাওসার হত্যা মামলার আসামি হয়ে প্রায় ৯ বছর কানাডায় ছিলেন। গত বছর তিনি দেশে ফিরে যুবলীগের পদ বাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ানো টিপু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম একজন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের বিপরীত পাশের রুফটপ রেস্তোরাঁয় ছাদে বসে গোপন বৈঠক করা হয়। ২০২২ সালের ১৫ জানুয়ারি ওই বৈঠকে পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিল বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিক। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। 
ডিবি ও আদালত সূত্র থেকে জানা গেছে, কিলার মুসা জবানবন্দিতে নিজেকে রাজধানীর পল্লবী এলাকার ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার বলেও দাবি করেন। জবানবন্দিতে মুসা বলেন, গত বছরের ১৫ জানুয়ারি তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদারের ছোট ভাই টিটুকে ফোন দেন। তিনি তাকে বায়তুল মোকাররমের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে ‘রুফটপ’ রেস্তোরাঁয় থাকতে বলেন।

পরে সেখানে গিয়ে দেখেন, আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ ওরফে মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার ওরফে রানা, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা ওরফে সাগর, মোল্লা রানা, এক্সেল সোহেল, আমিনুল ওরফে আমিনুর, বাবুল তালকুদার, রিফাত, টিটু ও খাইরুলকে। বৈঠকের শুরুতেই মতিঝিল, শাহজাহানপুরে ঠিকাদারি ও স্কুলে ভর্তিবাণিজ্য নিয়ে কথা শুরু হয়। একপর্যায়ে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার রেগে গিয়ে বলেন, জাহিদুলের টেন্ডারের মধ্যস্থতা করেন। কিন্তু তাদের কাছে এসবের সঠিক হিসাব দেন না।
জবানবন্দিতে মুসা বলেন, কাউন্সিলর মারুফ ডিশের ব্যবসা করেন। তার লোকজন ডিশের লাইন দিতে শাহজাহানপুরে গিয়েছিল। তখন তাদের মারপিট করে জাহিদুলের লোকজন। এ ঘটনায় মারুফ মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ জাহিদুলের লোকদের গ্রেপ্তার করেনি। উল্টো জাহিদুল পুলিশের কাছে মারুফের বিরুদ্ধে বিচার দেন। তখন মারুফ রাগারাগি করেন। সেদিন ‘রুফটপ’ রেস্তোরাঁর বৈঠকে সবাই জাহিদুল ইসলাম টিপুর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার বলেন, দুবাইয়ে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও মানিক মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে যে ১০০ ছাত্র ভর্তির কথা বলেছিলেন, তার কী হলো? তখন মারুফ বলে, এ নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। কিন্তু জাহিদুল এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ।

জিসান ও মানিককে ভর্তিবাণিজ্যের ভাগ দিতে হলে তা অন্যদের অংশ থেকে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন জাহিদুল। তখন রিফাতের মুঠোফোন দিয়ে দুবাইয়ে থাকা মানিককে ফোন দেন মতিঝিলে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার। তিনি জিসানকেও এই বৈঠকে ভার্চুয়ালিযোগ দেওয়ার জন্য মানিককে বলেন। এরপর জিসান ও মানিক উভয়ে দুবাই থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেয়। তারা জাহিদুলের কর্মকাণ্ডের কারণে রাগারাগি করেন। এ সময় খালেদ ও জাহিদুলের লোকদের এলাকাছাড়া করতে নির্দেশ দেয় জিসান। নগর সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ-কাউন্সিলর মারুফকে উদ্দেশ করে জিসান ও মানিক বলেন, জাহিদুলকে মেরে ফেলতে হবে। জাহিদুল না থাকলে সবাই সুবিধা পাবে।
মুসা জবানবন্দিতে আরও জানায়, বৈঠকে অংশ নেওয়া রবিনকে দুইদিনের মধ্যে দুই লাখ টাকা ব্যবস্থার দায়িত্ব দেয় কাউন্সিলর মারুফ। তবে সাবেক ছাত্রলীগে সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার এক্সেল সোহেলকে তিন লাখ, মারুফকে পাঁচ লাখ, রবিনকে দুই লাখ, বাবুলকে তিন লাখ ও টিটুকে পাঁচ লাখ টাকা জোগাড় করতে বলেন। এই টাকা জাহিদুল হত্যায় ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়। সেদিন রেস্তোরাঁর বিল দেন টিটু।
জবানবন্দিতে মুসা বলেন, রুফটপ রেস্তোরাঁয় বৈঠকের সপ্তাহখানেক পর তিনি ঢাকার বাইরে যান। তখন শামীম তাকে ফোন দিয়ে বলেন, মোল্লা রানা তাকে খুঁজছেন। মোল্লা রানা তাকে ঢাকায় আসতে বলেছেন। ঢাকায় ফিরে মুসা ফোন দেন মোলা রানাকে। তাকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফখরুদ্দিন বিরিয়ানি হাউসে আসতে বলা হয়। সেখানে গিয়ে তিনি সোহেল শাহরিয়ার, মোল্লা রানা, এক্সেল সোহেল, আমিনুল, শামীম ও রিফাতকে দেখতে পান। সেখানে বসে মানিককে ফোন দেন এক্সেল সোহেল। তিনি মানিকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র চান। তখন দুবাই অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী মানিক তাকে বলেন, শামীমের কাছে একটি অস্ত্র আছে। সেখানে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আরেকটি অস্ত্রের ব্যবস্থা করে দেবেন। পরে জিসানকে ফোন দেন এক্সেল সোহেল। তিনি ইমতিয়াজ জিতুকে তার অস্ত্রটি দিয়ে দিতে বলেন।
মুসা জবানবন্দিতে বলেন, দ্বিতীয় বৈঠক শেষে নগর আওয়ামী লীগ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ ও কাউন্সিলর মারুফ বলেন, কোনো কিছু লাগলে তারা (শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান-মানিক) ব্যবস্থা করে দেবেন। এ সময় সোহেল শাহরিয়ার বলেন, সারা জীবন জাহিদুলের সঙ্গে থেকে তিনি কিছু পাননি। সমর্থন পেলে তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে চান। তখন সোহেল শাহরিয়ারকে আশরাফ বলেন, তুমি কাজ চালাও, আমি দেখব। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জাহিদুলকে মতিঝিল কলোনিতে খুন করা যাবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়, এখানে খুন করলে সবাই ফেঁসে যাবেন। খুনের কাজ করতে হবে ওয়ার্ডের বাইরে। বৈঠকে জাহিদুল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তা শামীমকে জানানোর জন্য আমিনুল ও সোহেল শাহরিয়ারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

শাহজাহানপুরের মির্জা আব্বাস কলেজের আশপাশে থাকার জন্য রানা মোল্লা, উজ্জ্বল ও এক্সেল সোহেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর শাহজাহানপুরের আমতলা থেকে জাহিদুলের রেললাইনের বাসা পর্যন্ত নজরদারির দায়িত্ব রিফাতকে দেওয়া হয়। শামীমকে মোটরসাইকেল কেনাসহ খরচ চালাতে দুই লাখ টাকা দেওয়া। রানা  মোল্লা, আমিনুল ও রিফাতকে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সবাই চলে যান।
জবানবন্দিতে মুসা বলেন, গত বছরের ৮ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি মানিক ও জিসান তাকে ফোন করেন। তারা জাহিদুলকে খুন করার কাজটি দ্রুত শেষ করতে বলেন। তারা প্রায় প্রতিদিন ফোন করতেন। পরে জিসানের নির্দেশনা অনুযায়ী, জাহিদুলকে হত্যার জন্য সাগরের কাছ থেকে ১৫টি গুলি সংগ্রহ করা হয়। মুসা জবানবন্দিতে বলেন, সেই অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় ‘শূটার’ মাসুম কাছ থেকে জাহিদুলকে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনার সময় তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল শামীম। জবানবন্দিতে মুসা বলেন, তিনি (মুসা) এই হত্যাকাণ্ডের সামগ্রিক ঘটনায় জড়িত ছিলেন। 
মামলার বাদী টিপুর কাউন্সিলর স্ত্রী ফারজানা ডলি ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, চার্জশিট যাদের নাম উঠে এসেছে। বিশেষ করে ১০ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর ও সাবেক দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার অচিরেই গ্রেপ্তার করা হোক। এই মামলার আসামিরা বেরিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এ নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আমার স্বামী হত্যাকা-ে যারা জড়িত তাদের ফাঁসির দাবি করছি। ৬-৭ বার আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ছয়টি জিডি করেছি।