ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চা শিল্পের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ২০:০৮, ৪ জুন ২০২৩

চা শিল্পের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

দেশের চা শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসার ঘটিয়ে বিশ্ব দরবারে ব্র্যান্ডিং করতে চায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রবিবার (৪ জুন) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ‘৩য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন ও ১ম জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

টিপু মুনশি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজরদারি এবং নানামুখী উদ্যোগের ফলে দেশের চা খাত আজ টেকসই ও মজবুত অবস্থানে এসেছে। গুণগতমান সম্পন্ন চা উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন শ্রমিকবান্ধব নেতা। গরীব-দুঃখী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। চা শিল্পের সঙ্গে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক যার অর্ধেকের বেশি নারী শ্রমিক নিয়োজিত আছে। এ শিল্পের সঙ্গে তাদের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। যেকোনো শিল্পের প্রাণ হচ্ছে শ্রমিক। অতএব তাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিয়ে নিজে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। শ্রমিকরা তা নির্দ্ধিধায় মেনে নিয়েছেন।’

টিপু মুনশি জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় ১০০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি বছর দেশে চায়ের চাহিদা ৫-৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৭ কোটি মানুষ এককাপ করে চা পান করলেও ১৭ কোটি কাপ চা প্রয়োজন। আমরা একজন প্রতিদিন ৩-৪ কাপ চা পান করে থাকি। কিন্তু চা উৎপাদন সে হারে বৃদ্ধি পায় না। এ জন্য চা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

 চা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং এর অংশীজন হিসেবে চা বাগান মালিক, চা উৎপাদনকারী এবং প্যাকেজিং বিপণন কোম্পানিসহ চা শিল্পে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংগঠনকে প্রদেয় ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ চা শিল্পের বিকাশ ও অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চায়ের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বিপণন প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং সর্বোপরি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চায়ের নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার পথ তৈরি করতে হবে।’

মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের চা শিল্পে অসামান্য অবদান রাখেন। চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর ৪ জুন চা দিবস পালন করা হয়।

 এর আগে, দেশের চা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো চালুকৃত ‘জাতীয় চা পুরস্কার’-২০২৩ দুই ব্যক্তি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

 বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, টি টেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান এবং বাংলাদেশ চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

আট ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান- ভাড়াউড়া চা বাগান, সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান-মধুপুর চা বাগান, শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লি., শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী মো. আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়), শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান- জেরিন চা বাগান, বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ কোম্পানি-কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট লি., দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা কোম্পানি-গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লি., শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (চা শ্রমিক)- উপলক্ষী ত্রিপুরা, নেপচুন চা বাগান।

এমএইচ

×