ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে খাল, নেই পানি নিষ্কাশনের প্রবাহ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ২ জুন ২০২৩

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে খাল, নেই পানি নিষ্কাশনের প্রবাহ

আর্বজনা

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের একমাত্র খালটি এখন বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।  সব ধরনের বর্জ্য এই খালটিতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এখন আর পানির প্রবাহ নেই। 

খালটির দুইপাড় দখল করে তোলা হয়েছে শত শত স্থাপনা। সব চলছে ফ্রি-স্টাইলে। ফলে পৌরবাসীর প্রাণের স্পন্দনখ্যাত এই খালটি এখন রক্ষা করতে না পারলে পৌর শহরে বসবাস উপযোগিতা থাকবে না বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। খালটির দখল দারিত্ব উচ্ছেদ করার পাশাপাশি খালের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা জরুরি প্রয়োজন।

আন্ধারমানিক নদী থেকে উঠে আসা খালটি শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে একাংশ চিঙ্গরিয়ার দিকে চলে গেছে। অপরাংশ এতিমখানা-অফিস মহল্লা হয়ে রহমতপুর পর্যন্ত চলে গেছে। আরেকাংশ চিঙ্গরিয়ার পাশ দিয়ে কবি নজরুল ইসলাম সড়কের দিকে গেছে। রহমতপুরে চৌরাস্তায় বেড়িবাঁধের ওখানে একটি  এক ভেন্টের স্লুইস ছিল। যেখান দিয়ে পানি আরপাঙ্গাশিয়া নদীতে যাওয়া আসা করত। ওই স্লুইসসহ খালের অগ্রভাগ ভরাট করে পাকা স্থাপনা করা হয়েছে। 

এখন শহরের প্রাণখ্যাত এই খালটি দখল আর দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। খালটি যে যার মতো করে দখল করছে। এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। পানির দূষণে, দুর্গন্ধে মানুষ বসবাস করতে পারছে না। স্থানীয়রা দুইপাড়ে আবার খালের সঙ্গে শত শত টয়লেটের আউটলাইন দিয়ে রেখেছে। এক কথায় খালটিকে হত্যার মিশন চলছে। 

গেল বছর এ খালের একটি অংশ (কবি নজরুল ইসলাম সড়কের পাশের) দখল করে দেয়া বাঁধ উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষ অপসারণ করায় সেখানটায় এখন জোয়ার-ভাটায় কমবেশি পানির প্রবাহ রয়েছে। দুই পাড়ের মানুষ আগের চেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। 

বছর দুই আগে এতিমখানা কালভার্ট থেকে রহমতপুর পর্যন্ত অংশে খালের দুই পাড়ের কিছু স্থাপনা অপসারণ করা হয়। তবে তা ছিল নামকাওয়াস্তে। এখন আবার সেই আগের অবস্থা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ অ্যাসোসিয়েশন (বেলা) বরিশালের সমন্বয়কারীসহ, স্থানীয় বাপা, নাগরিক উদ্যোগের একটি দল এ খালটির দুই পাড় পরিদর্শন করেন। তারা স্থানীয় সচেতনমহলসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন। বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন খালটির অবস্থা স্বচক্ষে দেখে চরম উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন।

নাগরিক উদ্যোগ কলাপাড়ার আহ্বায়ক নাসির তালুকদার জানান, এখন প্রথমে খালটির সীমানা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এরপরে দখলদারের তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো দরকার।

কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার জানান, খালটির চিঙ্গরিয়ার একাংশ দখলমুক্ত করা হয়েছে। বাকি এলাকা দখলমুক্ত করতে উপজেলা ভূমি প্রশাসনকে তারা সর্বাত্মক সহায়তা করে আসছেন। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে খালটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।

 এসআর

×