
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মুক্তি রানী বর্মণের পরিবার। ছবি: জনকণ্ঠ
নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুড়া গ্রামে বখাটে কিশোরের হামলায় নিহত স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণের (১৬) বড় বোন নিপা রানী বর্মণকে চাকরি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত শাখায় আউট সোর্সিংয়ে নিপাকে চাকরি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মুক্তির বাবা নিখিল চন্দ্র বর্মণসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করেন। এ সময় তারা জেলা প্রশাসকের কাছে মুক্তি হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে সব ধরনের সহযোগিতা চান। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ দীর্ঘক্ষণ তাদের কথা শোনেন এবং জানতে পারেন, মুক্তির আরও পাঁচ বোন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে। তাই তিনি তাদের শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তাছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর কার্যালয়ের নেজারত শাখায় মুক্তির বিএ পাশ বড় বোন নিপা রানী বর্মণের চাকরির (আউটসোর্সিংয়ে) ব্যবস্থা করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ছাড়াও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র পণ্ডিত, বারহাট্টা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা সেন্টুসহ স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, মুক্তি হত্যার ঘটনাটি আমাদের মনে কঠিন দাগ কেটে গেছে। এই সময়ে তার পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। প্রশাসনে চাকরির সঙ্গে কিছু মানবিক দায়িত্বও রয়েছে আমাদের। সে দায়িত্ব থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তির বড় বোনের জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করেছি। এতে পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা সহায়তা পাবে। তাছাড়া পরিবারটিও আমাদের সুনজরে থাকবে।
জানা গেছে, বারহাট্টার প্রেমনগর ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণকে গত ২ মে স্কুল থেকে ফেরার পথে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে একই গ্রামের কাওসার মিয়া নামের এক বখাটে কিশোর। প্রেমে সাড়া না দেয়ায় সে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটায়। পরদিন বিকেলে কাওসারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় জেলা পুলিশ। স্কুলছাত্রী ও উদীচী কর্মী মুক্তি হত্যার প্রতিবাদে নেত্রকোনা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
এরই মধ্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরুও মুক্তিদের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে মানসিক সান্ত্বনা দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে কিছু আর্থিক সহায়তা দেন। পাশাপাশি তিনি মুক্তির ভাইবোনদের পড়ালেখায় সহযোগিতার ঘোষণা দেন।
এছাড়া নেত্রকোনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত কুমার সরকার সজলও মুক্তির পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
এসআর