ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেল কারাগারে 

 স্টাফ রিপোর্টার, যশোর

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৬ মার্চ ২০২৩

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেল কারাগারে 

শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেল

যশোর শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও শহর যুবলীগ নেতা ম্যানসেলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার নেতৃত্বে সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের হামলা ও মারপিটের অভিযোগ উঠায় পুলিশ তিনসহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করে। 

রবিবার শহরের মুজিব সড়কের প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা এক কর্মচারীকে মারপিটের পর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসী ম্যানসেলকে তিন সহযোগীকে আটক করে। এ ঘটনায় জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ থানায় মামলা করেছেন। সন্ত্রাসী মাহবুব রহমান ম্যানসেল যশোর পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং হত্যা, চাঁদাবাজিসহ দেড় ডজন মামলার আসামি। তার আটকের খবরে শহরে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

আটককৃতরা হলেন, শহরেরর ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকার ফারহাদুর রহমান ওরফে আলমাসের ছেলে মেহবুব রহমান ম্যানসেল, তার সহযোগী ষষ্ঠীতলা এলাকার সলেমান মীরের ছেলে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রাকিব হাসান ওরফে ভাইপো রাকিব, রেলবাজার এলাকার আলী হোসেনের ছেলে অনিক হাসান মেহেদী ও ষষ্ঠীতলা এলাকার মীর শওকত আলীর ছেলে মীর সাদি। 

যশোর প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট ডা. বাপ্পি কবি শেখর জানান, রবিবার বিকালে ম্যানসেল নামে একজন তাদের কেন্দ্রের চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। রেজিস্ট্রেশন করার পর জরুরি বিভাগে তাকে কিছু ব্যায়াম দেখানো হয়। ব্যায়ামের পর একটি মেশিনে তার থেরাপি নেওয়ার কথা। প্রতিষ্ঠানের কর্মী আল আমিন ওই মেশিনটি প্রস্তুত করে দেন। এ সময় অফিসের প্রধান জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন আল আমিনকে ডাক দিলে তিনি রুমের বাইরে আসেন। থেরাপি মেশিন চালু না করে রুমের বাইরে আসায় ম্যানসেল ও তার সাথে থাকা লোকজন আল আমিনকে ডেকে নিয়ে মারপিট শুরু করেন। 

তার চিৎকার শুনে মুনা আফরিন নিচে নেমে এলে গালিগালাজ করে তাকে মারতে উদ্যত হয় সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে তাকে লাঞ্ছিত করের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল আলমসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ম্যানসেলসহ চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন আটক চারজনসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার পর সন্ধ্যায় পুলিশ ওই চারজনকে আদালতে প্রেরণ করে। আদালতে হাজির করা হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট মারুফ আহমেদ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এ বিষয়ে জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন বলেন, আমরা চাকরি জীবনে এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। অফিসে কর্মরত অবস্থায় এভাবে লাঞ্ছিত হতে হবে কখনো ভাবতে পারিনি।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত শফিকুল আলম বলেন, সরকারি অফিসে ঢুকে কাজে বাধা দেওয়া, কর্মকর্তাকে শ্লীলতাহানি, কর্মচারীতে মারপিট ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আটককৃতদের আদালতে নিলে বিচারক কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। এদের নামে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, হত্যাসহ মামলা রয়েছে। 
 
 

এমএস

×