ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ

পুনর্খনন করা হিসনা নদী প্রভাবশালীদের দখলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ০০:৪৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

পুনর্খনন করা হিসনা নদী প্রভাবশালীদের দখলে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মহিষাকুণ্ড বাঁধবাজার এলাকায় হিসনা নদীতে নেট দিয়ে ঘেরা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মৃতপ্রায় হিসনা নদী পুনরুদ্ধারের জন্য খনন করা হয়। প্রায় ৩০ বছর পর ২০২২ সালে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নদী পুনর্খনন করা হয়। যার গভীরতা হওয়ার কথা ছিল ৩০ ফুট আর নদীর দুইপাড়ে প্রশস্ত হওয়ার কথা ছিল ৬৫ ফুট, কিন্তু তার কোনোটি করা হয়নি। সে সময় নদী খনন কাজের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্। কিন্তু বছর না যেতেই খনন করা হিসনা নদী চলে যায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে এবং সেখানে তারা মাছ চাষ শুরু করেন। 
নেট বা জাল দিয়ে ঘেরা বাঁধের ছবি তোলার সময় মাছের ঘের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এগিয়ে আসেন এবং তারা ছবি তোলার কারণ জানতে চান। সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়ে তারা নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তারা বলেন, নেট দিয়ে বাঁধ দিয়েছি কারণ নির্দিষ্ট স্থান জলাশয় ভাগ করে মাছ চাষ করার জন্য। যাতে করে একজনের চাষ করা মাছ অন্যজনের দখলীয় অংশে না যেতে পারে।

তারা আরও বলেন, যখন যে ক্ষমতায় আসেন তখন তাদের লোকজন মাছ চাষ করে থাকেন এ নদীতে। এখানে সাধারণ মানুষের বলার কিছু নেই এবং করারও কিছু নেই। পুনর্খনন করা হিসনা নদী দখল করে মাছ চাষের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার হোসেন আহমেদ স্বপন জানান, নদীটি ইজারা হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। যেহেতু হিসনা নদী আপনার উপজেলায়, তাই ইজারা দেওয়া হলে বিষয়টি আপনার জানা উচিত ছিল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 
নদী খনন ও দখলের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাক্কীর আহমেদ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, নদীর গভীরতা হওয়ার কথা ছিল ৩০ ফুট আর নদীর দুই পাড়ে প্রশস্ত হওয়ার কথা ছিল ৬৫ ফুট। বাস্তবে তা সবক্ষেত্রেই হয়েছে অর্ধেক। ফলে সুফল পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সর্বসাধারণ ও সুফলভোগীদের। আবার তা দখল করে মাছ চাষও শুরু করেছে এলাকার প্রভাবশালীরা। পূর্বে যা ছিল, খননের পরও একই অবস্থায় পরিণত হয়েছে। 
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল জাব্বার বলেন, সরকারি খাল ও নদী মাছ চাষ করার জন্য জেলা থেকে বছর বছর ইজারা দেওয়া হয়। হিসনা নদীটিও খননের পূর্বে ইজারা দেওয়া হতো বলে তিনি উল্লেখ করেন। বর্তমানে কি অবস্থা তা তিনি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি। হিসনা নদী তীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি, খনন করা হিসনা নদী দখলমুক্ত করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।

×