ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ দখল করে দোকান নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ০১:০৮, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ দখল করে দোকান নির্মাণ

আশুগঞ্জ গোলচত্বরের স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙ্গে দোকান নির্মাণ

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি। মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ও বিজয়ের শেষ প্রান্তে আশুগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই দুঃসহ স্মৃতিকে অমলিন করে রাখতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের্^ আশুগঞ্জ গোলচত্বর এলাকায় গড়ে তোলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিস্তম্ভ। 
কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের এই স্মৃতিস্তম্ভটি অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দখল করে নিচ্ছে। স্মৃতিস্তম্ভের দেওয়াল ভেঙে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা দোকান ঘর। স্মৃতি স্তম্ভের মূল অবকাঠামোকে পেছনে ফেলে এমন অবৈধ দখলের কারণে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। স্মৃতিস্তম্ভটির সামনেই রাখা হয়েছে ইট, বালু ও অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী। এ সময় চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল কালামকে দোকান নির্মাণকাজ তদারকি করতে দেখা যায়। তিনি জানান, এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নয়নে দোকান ও কফি শপ করা হবে। আমাদের সঙ্গে দুজন মুক্তিযোদ্ধাও পার্টনার রয়েছে। 
সংক্ষুব্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান ও ছয়জন মেম্বারের নেতৃত্বে আশুগঞ্জ গোলচত্বর অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিস্তম্ভ দখল করে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। ভেঙে ফেলা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভের নিরাপত্তা দেওয়াল। স্মৃতিস্তম্ভের মূল অবকাঠামোকে পেছনে ফেলে তৈরি করা হচ্ছে পাকা দোকান ঘর। এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক আর কোনো কাজ হতে পারে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিস্তম্ভ দখল করছে তাদের ধিক্কার জানাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা শেষ ইজ্জতটুকু নিয়ে মরতে চাই।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও আশুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, আমরা প্রতিবছরই এই স্থানটিতে ফুল দিয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে যাই। সেখানে দোকান-পাট নির্মাণের খবর পেয়েছি। যেহেতু জায়গাটি রেলওয়ের আমরা তাদেরকে বিষয়টি জানাব এবং তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই সেখান থেকে দোকানগুলো ভেঙে উচ্ছেদ করব।

×