ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শীতের তীব্রতা কমায় বোরো ধান লাগাতে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা 

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১৪:২২, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

শীতের তীব্রতা কমায় বোরো ধান লাগাতে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা 

জমিতে ধান রোপণ করছেন কৃষকরা। ছবি: জনকণ্ঠ

চুয়াডাঙ্গায় শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় ক্রমাগতভাবে কর্মহীন হয়ে পড়ে জেলার কৃষকরা। স্বাভাবিক কর্মজীবনে দেখা দেয় স্থবিরতা। তীব্র শীতে ইরি-বোরোর চারা রোপণ নিয়েও বিপাকে পড়েন তারা। 

এমন কী শীতে কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় বেশি টাকায় শ্রমিক নিতে হয়। গত কয়েক দিন ধরে জেলায় শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের জমিতে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার চার উপজেলায় ৩৬ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮১৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২ হাজার ৪৬৪ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৯ হাজার ৯৩০ হেক্টর, জীবননগর উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। 

এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় ১ হাজার ৯০৪ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে ধান রোপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানান, ২১ জানুয়ারি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। তাপমাত্রা কম ও হিমেল বাতাসে কৃষকরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। এরপর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। শুক্রবার তাপমাত্রা বেড়ে সর্বনিম্ন ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।  

উথলী গ্রামের দিনমজুর জাহিরুল ইসলাম বলেন, তীব্র ঠাণ্ডায় কাজ করা খুব কষ্টকর ছিল। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এখন কাজ করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। 

জীবননগের কৃষক হাসান নিলয় বলেন, এ বছর দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। কনকনে ঠাণ্ডা ও হিমেল বাতাসে বীজতলা থেকে চারা এনে রোপণ করার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিক নিয়ে কাজ করেত পারছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছর আমরা লক্ষ্যমাত্রার অধিক বীজতলা প্রস্তুত করেছি, যাতে ধানের চারার কোনো সংকট না হয়। তাই এ বছর বোরো চারার তেমন কোনো সংকট নেই। এ জেলার কৃষক এখন বোরো আবাদের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিছু চারার বয়স ১ মাসের বেশিও হয়ে গেছে। 

চলতি মৌসুমে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনসহ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী আমরা। গত মৌসুমে জেলায় ৩৬ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল। শীত মৌসুমে মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে ঘন কুয়াশায় কৃষকদের আমরা বীজতলা থেকে শিশির সরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। জমিতে জমে থাকা অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে বলা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। কৃষকদের সকল ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া এবং চারা রাতের বেলায় ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। বীজতলা লাল হয়ে গেলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দিতে বলা হয়। এতে ভালো ফল পাওয়া গেছে। 

এসআর

×