শিক্ষা সফরে শিক্ষকরা
পটুয়াখালীর বাউফলের কালিশুরী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকরা কলেজ বন্ধ দিয়ে কলেজের টাকায় শিক্ষার্থী ছাড়াই শিক্ষা সফরে গেছেন। ওই কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে ৫৬ সদস্যদের একটি দল আনন্দ ভ্রমণে সিলেট যান। তাই বুধবার (২৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারেননি।
জানা গেছে, কালিশুরী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নেছার উদ্দিন ওরফে জামাল সিকদারের নেতৃত্বে ৫৬ সদস্যদের একটি দল সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। গত সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষকেরা আনন্দ ভ্রমণের জন্য কলেজ থেকে বের হয়ে যান। পরে রাতে বরিশালে অবস্থান করেন। এর পরদিন মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ভোরে বাসে করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন,‘সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করার জন্য পাঁচদিন তাদের ওই এলাকায় অবস্থান করার কথা রয়েছে।’
অপর এক শিক্ষক বলেন,‘জনপ্রতি প্রত্যেক শিক্ষকের ৭ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে চার হাজার টাকা কলেজের তহবিল থেকে ব্যয়ভার বহন করা হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘আমাদের টাকায় স্যারেরা আনন্দ ভ্রমণে গেছেন। যেহেতু কলেজ বন্ধ দিয়ে গেছেন, আমাদেরকেও নিতে পারতেন। আমরাও টাকা দিয়ে যেতাম।’
এক অভিভবাবক বলেন, কলেজের তহবিল মানেই শিক্ষার্থীদের টাকা। আর সেই টাকায় শিক্ষার্থী ছাড়া কলেজ বন্ধ দিয়ে শিক্ষকেরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ ভ্রমণে যায়। এটা খুবই দুঃখজন। সরকারি কোনো কর্মকর্তা কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি থাকলে অধ্যক্ষ এমন কাজটি করতে পারতেন না।’
শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষা সফর হয় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে কালিশুরী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নেছার উদ্দিন বলেন,‘শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে তারা আসেনি। আর কলেজ পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই শিক্ষা সফর করা হয়েছে।’
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ হাওলাদার বলেন,‘আমাকে বলেছে শিক্ষা সফর।’
শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষা সফর হয় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দেখতে আছি বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,‘শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষাসফরে যাওয়ার সুযোগ আছে। শিক্ষকেরা আনন্দ ভ্রমণে গেছেন কিনা- তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমএইচ