ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাতের আঁধারে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি

প্রকাশিত: ২০:৩২, ২৭ নভেম্বর ২০২২

রাতের আঁধারে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি

অতিথি পাখি

বিভিন্ন বিল ও জলাশয় থেকে ফাঁদে ফেলে অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে এ বিষয়ে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। পরিবেশবিদরা বলছেন, এটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

প্রতি বছরের মতো এবার শীতের শুরুতে শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে দলবেঁধে অতিথি পাখি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নড়াইলের বিভিন্ন বিল ও জলাশয়ে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে চাঁচুড়ী বিল, ইছামতি বিল, কাড়ার বিল, নলামারা বিল, গোপালপুর-বগুড়ার বিল হাজার হাজার অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে। 

জলাশয়ে দেশি-বিদেশি পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, কালকোচ, কায়েম, ডুঙ্কর, পানকৌড়ি, পাতাড়ি হাঁস, হাঁস ডিঙ্গি, কাদা খোঁচা, খয়রা, চেগা, কাচিচোরা, মদনটাক, শামুখখোলা ও বক।

তবে কিছু শিকারি আছে, যারা পাখি ধরে বিক্রি করছে। শিকারের জন্য ব্যবহার করছে ফাঁদ । ফলে এই অঞ্চলের অতিথি পাখির বিচরণ ক্ষেত্রগুলো ক্রমশই পাখিদের মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, অতীতে কীটপতঙ্গের সঙ্গে কীটনাশক ও কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করা হতো। যেখানে পাখিদের আনাগোনা বেশি, শিকারিরা ওইসব বিল ও জলাশয়ের বৃহৎ এলাকাজুড়ে জালের ফাঁদ পেতে ঘিরে তার মাঝখানে সাউন্ডবক্সে পাখির ডাক বাজানো শুরু করে।

আর ওই ডাক শুনে পাখিরা শিকারির ফাঁদে পড়তে শুরু করে।এভাবে প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চলে পাখি শিকার। রাতে শিকার করা এসব পাখি সূর্যের আলো দেখার আগেই বিক্রি হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিকারি বলেন, বাজারে অতিথি পাখির চাহিদা খুব বেশি। ধরতে পারলে বিক্রিতে কোনো সমস্যা নেই। অনেকেই অগ্রীম টাকা দিয়ে রাখেন। ফলে ভোর রাতেই পাখি তাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সিনিয়র সাংবাদিক জহির ঠাকুর বলেন, নানা কৌশলে পাখি নিধন চলছে। কোনোভাবেই শিকারিদের এই ভয়াবহ ছোবল থেকে মুক্ত হতে পারছে না পাখিরা। এসব পাখি নিধনের কারণে একদিকে জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে না, ভারসাম্যও রক্ষা করে। এখনই পাখি রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। সঙ্গে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা ২০১২ আইনের ৩৮ (১) ধারা মোতাবেক অতিথি পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। শিকারিদের শনাক্ত করতে পারলে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×