ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতি ও ট্রাক চালনা

-

প্রকাশিত: ০১:২০, ১ অক্টোবর ২০২২

রাজনীতি ও ট্রাক চালনা

মোঃ মামুন চৌধুরী

নাম মুখলিছ মিয়া। তিনি জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মড়রা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। পিতার একমাত্র পুত্র হওয়ায় জীবিকার তাগিদে ১৯৮২ সাল থেকে ট্রাক চালকের পেশায় যুক্ত হন। সেই সময়ে ট্রাক চালিয়ে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন হতো। বর্তমানে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। দুই ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জনক মুখলিছ মিয়া বেশি দূর পড়াশুনা করতে পারেননি।

সেই থেকে এ পর্যন্ত তিনি ট্রাক চালকের পেশায় যুক্ত আছেন। উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি প্রায় ৬ মাস পূর্বে একটি ট্রাক ক্রয় করেছেন। বর্তমানে নিজের ট্রাক চালাতে পারছেন। তার আয়ে এক ছেলে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। আরেক ছেলে অনার্স পাস করে চাকরি করার চেষ্টায় আছে। এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। আরেক মেয়ে লেখাপড়া করছে। জীবনের শুরু থেকে তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি বর্তমানে যুবসংহতি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

গত শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাপা থেকে মনোনয়ন পেয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যুক্ত আছেন শ্রমিক নেতৃত্বেও। তিনি ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরি শায়েস্তাগঞ্জ শাখার সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। কোন ট্রাক অথবা বাস শ্রমিকের সমস্যায় তিনি দ্রুত এগিয়ে যান। শ্রমিকদের মাঝে তার বিরাট গ্রহণযোগ্যতা আছে। স্থানীয়ভাবে তিনি সালিশ বৈঠকেও মুরুব্বীর ভূমিকা পালন করে লোকজনের সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করে দিচ্ছেন। দৈনিক জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ওইসব তথ্য জানালেন পরোপকারী মোঃ মুখলিছ মিয়া। তিনি বলেন, চেষ্টা ও শ্রমের মাধ্যমে আসে সফলতা।

অসৎ পথে উপার্জিত অর্থে সম্পদ করে শান্তিতে বসবাস করা যায় না। তাই তিনি সৎ পথে উপার্জন করেছেন। ছেলেকে বড় ইঞ্জিনীয়ার বানাতে চান।  তিনি বলেন, তার পিতা জমিজমা রেখে গেছেন। তিনি ওই জমিজমা বিক্রি করেননি। পূর্বে ওই জমির তেমন একটা মূল্য ছিল না। রেখে যাওয়া সম্পত্তি বর্তমানে মূল্যবান হয়েছে। নিজের ট্রাকের আয়ে তার পুরো পরিবার সুন্দরভাবে চলছে। তিনি অসহায় মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ট্রাক শ্রমিক জমির মিয়া বলেন, যেকোন সমস্যায় পাশে পাওয়া যায় মুখলিছ ভাইকে।

তিনি ট্রাকের মালিক হলেও চালকের পেশায় যুক্ত আছেন। আমাদের ভুলেননি। ভুলেননি তার আদিপেশাকে। তিনি শ্রমিক নেতৃত্বের পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। করছেন সমাজসেবাও। ট্রাক চালক আমির হোসেন বলেন, মুখলিছ মিয়া চেষ্টা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের পাশে থাকেন। তার অহংকার নেই। জাপা নেতা আব্দুস ছালাম মেম্বার বলেন, মুখলিছ মিয়া দলের ত্যাগী কর্মী। তাকে দলের প্রয়োজনে পাওয়া যায়।
মোঃ মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ

×