ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে সংবর্ধিত হলেন সাফজয়ী ফুটবলার স্বপ্না 

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর

প্রকাশিত: ১৮:২৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

রংপুরে সংবর্ধিত হলেন সাফজয়ী ফুটবলার স্বপ্না 

সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেলা প্রশাসন।

সাফ চ্যাম্পিয়নের পর নিজ জেলা রংপুরে ফিরে খুশির সংবাদ দিয়েছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অন্যতম খেলোয়াড় সিরাত জাহান স্বপ্না। বিদেশি ক্লাবে খেলার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে এই তারকা খেলোয়াড় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, রংপুরের মানুষ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে দেখে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি। এভাবে বরণ করে নেয়া আমাকে সামনে ভালো করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।

স্বপ্না বলেন, বিদেশি ক্লাবে খেলার জন্য মৌখিকভাবে ৭ জনকে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে আমার নামও রয়েছে। আমিও বিদেশি ক্লাবে খেলবো।

২০২০ সালের ১৩ ফেব্রয়ারি দিনটি ছিল রংপুরবাসীর জন্য এক অবিস্মরণীয় দিন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলীকে এদিন রাজকীয়ভাবে বরণ করে নিয়েছিলেন রংপুরের মানুষ। ঠিক যেন মুঘল সাম্রাজের অধিপতি সম্রাট আকবর নতুন রূপে ফিরে এসেছিলেন। তার আগমন ঘিরে দিনভর নগরীর সর্বত্র চলে উৎসবের আমেজ।

আড়াই বছর পর এবার ফুটবল কন্যা সিরাত জাহান স্বপ্নাও ফিরলেন ঠিক যেন রানির বেশে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে বিমানযোগে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান সাফজয়ী ফুটবলার সিরাত জাহান স্বপ্না, সোহাগী কিসকো ও স্বপ্না রানী রায়। সেখানে তাদেরকে রংপুর বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। 

ছোদ খোলা গাড়িতে করে নিজ শহরে ঘুরেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না।

স্বপ্না সাংবাদিকদের বলেন, যখন আমি প্রথম ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম, তখন এলাকার অনেকে বাঁধা সৃষ্টি করেছিল। আমাদের সমাজের পুরুষেরা চায় মেয়েরা পিছিয়ে থাক। এখন আমার সাফল্যে তারাও আনন্দ প্রকাশ করছে। পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সামনে আমাদের আরও ভালো করতে হবে। 

অপর সাফজয়ী খেলোয়াড় স্বপ্না রানী রায় জানান, শিরোপা ঘরে আনতে পেরে আমরা গর্ববোধ করছি। দেশের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে  আছে। আরও ভালো কিছু করতে সবার সাপোর্ট চাই।

ঠাকুরগাঁয়ের এই ফুটবলকন্যা বলেন, ফুটবল খেলার শুরুতে অনেক বাঁধা এসেছে। হাফ প্যান্ট পরে মেয়েরা ফুটবল খেলছে বলে গ্রামের মানুষেরা কটুক্তি করেছে। এতেও আমরা থেমে থাকিনি। স্কুলপর্যায়ে খেলার সময় স্যারেরা অনেক সাপোর্ট করেছে। এখন সবাই উৎসাহ দিচ্ছে। 

ফুটবলার সোহাগী কিসকু বলেন, সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গোটা দেশের মানুষ আমাদের চিনেছে। আমরা চাই গ্রামের নারী ফুটবলাররা যেন গ্রামে খেলার সুযোগ পায়। 

এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন,রংপুর বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুর আহম্মেদ আজাদ, রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি, ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজলী বেগম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি, স্বপ্নার প্রথম ফুটবল প্রশিক্ষক হারুন অর রশিদসহ রংপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা এবং ক্রীড়া সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বরণের পর ছাদখোলা জিপ গাড়িতে সিরাত জাহান স্বপ্নাসহ তিন সাফজয়ী নারী ফুটবলারকে রংপুর নগরী প্রদক্ষিণ করানো হয়। এরপর রংপুর পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠে তাদের সংবধর্না দেয় রংপুর জেলা প্রশাসন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা।

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×