ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

কড়া জাতিগোষ্ঠীর প্রথম সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখায় নৌ-প্রতিমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

কড়া জাতিগোষ্ঠীর প্রথম সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখায় নৌ-প্রতিমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ চরম অভাব ও দুঃখ-কষ্ট পাড়ি দিয়ে কড়া জাতিগোষ্ঠীর প্রথম সন্তান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ‘লাপোল কড়া’। এরপর থেকে বিভিন্নজন থেকে পেয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা। এবার তাকে বাসায় ডেকে শুভেচ্ছা জানালেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নিজের আনন্দঘন এই মুহূর্তের কথা বর্ণনা দিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে লাপোল কড়া লিখেন, ‘বুঝেছি আমি স্বপ্ন যদি ফুলের মতো সুন্দর হয়, তবে ফুলের তোড়া সাজিয়ে দিতে হাজারো মালি রয়েছেন এই পৃথিবীতে। কড়া নৃগোষ্ঠীর মাত্র ২৮টি পরিবার টিকে আছে দেশে। মোট জনসংখ্যা ১শ’ ৪ জন। লাপোলের আগে তাদের গোষ্ঠীর কেউ মাধ্যমিকের গন্ডিও পেরোতে পারেনি। এ বছর কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লাপোল কড়া। এ পর্যন্ত আসতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এই তরুণকে। লাপোল তার ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের বিরল উপজেলা শাখার সভাপতি হারুন এক্কা দাদা ফোন করলেন। বললেন, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী, জননেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্যার তোমাকে ফোন করতে পারেন।’ লাপোল লিখেন, ‘বিরলের হাটে-মাঠে এই মানুষটিকে দেখেছি বহুবার। তিনি তো আদিবাসীদের পরমাত্মীয়। রাজীব নূর স্যার বলেছিলেন, কড়া জাতিগোষ্ঠীর নাম বাংলাদেশ সরকারের ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ভূমিকা অনেক। ‘হারুন দাদা ফোন করার কয়েক মিনিট পরেই খালিদ মাহমুদ স্যারের কল আসল আমার ফোনে। কোনদিন কল্পনাও করিনি যে, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর মতো এতবড় পদের একজন মানুষ আমাকে কখনো ফোন করবেন। নিজের শির লজ্জানত হলো। স্যার ফোন করে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় অভিনন্দন জানালেন। আমাকে বাসায় ডেকে নিলেন। ’ লাপোল-এর ভর্তির বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ছাপা হয়। অনেকেই প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে লাপোলকে অভিনন্দন জানান। তার পাশে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। লাপোলকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেবে বলে জানিয়েছে পে ইট ফরোয়ার্ড বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা পর্যন্ত এই টাকাটা পাবেন লাপোল। ছোট বোন পূর্ণিমাকেও দিনাজপুরের বিরল থেকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন লাপোল। ভর্তি করেছেন মিরপুরের বনফুল গ্রিনহার্ট আদিবাসী স্কুল অ্যান্ড কলেজে, নবম শ্রেণিতে। এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে পূর্ণিমাকে বৃত্তি দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া দলিতদের নিয়ে কাজ করা উন্নয়ন সংস্থা নাগরিক উদ্যোগও পূর্ণিমার জন্য একটি বৃত্তি দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
×