স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল এ্যাসোসিয়েশন অব এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন-আইএএএফের ডোপিং টেস্টের গোপন তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক সানডে টাইমস আর জার্মান টিভি চ্যানেল। যেখানে ১২ হাজার এ্যাথলেটের মধ্যে পাঁচ হাজার এ্যাথলিটের রক্ত পরীক্ষায় ডোপিংয়ের আলামত পাওয়া গেছে। এই ঘটনার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রীড়াজগতে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে ওয়ার্ল্ড এ্যান্টি-ডোপিং এ্যাজেন্সি-ওয়াডা। শুধু সংস্থাগুলোই নয় বরং খেলোয়াড়রাও এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন। ডোপ পাপীদের নিন্দাও জানিয়েছেন অনেকে। তাদেরই একজন অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন শেলি পিয়ারসন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে বুঝতে পারছি না নিষিদ্ধ জিনিস নিয়ে কিভাবে তারা ক্রীড়াজগতে প্রবেশ করে এবং টুর্নামেন্টে প্রতিযোগিতা করে। কেমন করেই বা তারা পদক জিতে গর্বিত হয়। তবে দিন শেষে আমার কাছে এটাই সান্ত¡না যে তারা ধরা পড়ছে।’
২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ১০০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন পিয়ারসন। তার আগে ২০১১ সালে দেগু বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপেও স্বর্ণপদক জেতেন তিনি। কিন্তু ২৮ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ানের দুর্ভাগ্য যে এবার চীনের বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে পারেননি তিনি। মূলত কব্জির ইনজুরির কারণেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েন পিয়ারসন। আগামী বছর এই আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে বিশ্বক্রীড়াজগতের মহাযজ্ঞ অলিম্পিক। আর পিয়ারসনের লক্ষ্য এখন শুধুই ব্রাজিলের রাজধানী রিওতে। তবে শিরোপা ধরে রাখতে মরিয়া এই অস্ট্রেলিয়ান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অলিম্পিকে পারফর্ম করাটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভাল শুরু করতে চাই আমি।’ অস্ট্রেলিয়ান এ্যাথলেটদের ডোপিংয়ের বিষয়ে কড়া সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির অলিম্পিক কমিটি। এওসি এর প্রধান কিটি চিলার বলেন, ‘যে ডোপ গ্রহণ করবে তাকে ভোঁতা করে দেয়া হবে। আর অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক দলের হয়ে কেউ যদি কোন ধরনের প্রতারণা করে তাহলে সেটা হবে লজ্জাজনক ঘটনা। বিমান থেকেই ছুড়ে ফেলে দেয়া হবে।’ আসলে খেলাতে নিজের পারফর্মেন্স বাড়াতেই নিয়মবহির্ভূত শক্তিবর্ধক ড্রাগ গ্রহণ করে থাকে খেলোয়াড়রা। অতীতে বহু এ্যাথলেটরা ডোপিংয়ের অপরাধে খেলা থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন। শুধু তাই নয়, পদক ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটে অনেকবার। ডোপ গ্রহণের ফলে কোন এ্যাথলেট যেন বাড়তি সুবিধা গ্রহণ করতে না পারে, সে কারণে আসর শুরুর আগে খেলোয়াড়দের মুখোমুখি হতে হয় ডোপ টেস্টের। তবে এবারে ডোপিং টেস্টের তথ্য গোপনের সংবাদ ফাঁস হওয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে ক্রীড়াজগতে। ২০০১-২০১২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ বছরের অনুষ্ঠিত হওয়া অলিম্পিকস ও বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ৫৫ জন স্বর্ণ জয়ীসহ ১৪৬ এ্যাথলেট বেআইনীভাবে পদক পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। এবার সন্দেহভাজন এ্যাথলেটদের মধ্যে রাশিয়া আর কেনিয়ার খেলোয়াড়দের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে বেশি।