
ছবিঃ সংগৃহীত
একসময় মানুষ ভেবেছিল চাঁদে যাওয়া শুধুই কল্পনাই রয়ে যাবে, কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছেন বাংলাদেশের একজন নারী, রুদবা ইয়াসমিন। স্পেস নেশন কর্তৃক পরিচালিত ‘মুন পায়োনিয়ার মিশন’-এ বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত এই ইভিএ স্পেশালিস্ট মহাকাশ অভিযানে নতুন ইতিহাস রচনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রুদবার শিক্ষা ও গবেষণার যাত্রাপথ শুরু হয় ঢাকার স্কলস্টিকা স্কুল থেকে। ছোটবেলা থেকেই আকাশের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। ২০১৪ সালে তিনি আমেরিকার মাউন্ট হলিউ কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে বাংলাদেশে ফিরে কোভিড মহামারির সময় ডেটা সায়েন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করেন।
তার গবেষণা স্পেস ওয়েদার, জিওম্যাগনেটিক স্টার্ম এবং মহাজাগতিক বিকিরণের ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল। এই গবেষণা তাকে নিয়ে গেছে ‘স্পেস নেশন’-এর মুন পায়োনিয়ার মিশনে, যেখানে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন ইভিএ স্পেশালিস্ট হিসেবে। মিশনের আওতায় চাঁদের পৃষ্ঠে হাঁটার প্রশিক্ষণ, রেডিয়েশন শিল্ড স্থাপন ও চাঁদের মাটি থেকে সম্পদ সংগ্রহের কাজ রয়েছে।
মুন পায়োনিয়ার মিশনে রুদবা প্রথম রাউন্ডে ছিলেন মুন বেসে ইভিএ স্পেশালিস্ট এবং পরের রাউন্ডে মিশন কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সিমুলেশন মিশনের মাধ্যমে তিনি মহাকাশ অভিযান পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। যদিও মিশনটি এখনও তিন দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং তারিখ ঘোষিত হয়নি, তবুও এর সফলতা ভবিষ্যতের আসল চাঁদের অভিযানে রুদবার জন্য পথ প্রশস্ত করবে।
একসময় মহাকাশ অভিযানে নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত ছিল, তবে এখন সুনিতা উইলিয়ামস, ভ্যালেন্টিনা তেরেস্কোভা, কল্পনা চাওলা প্রমুখ নারীর পথচলা রুদবা ইয়াসমিনের মতো তরুণ প্রজন্মের নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।
রুদবা ইয়াসমিন শুধুমাত্র একজন মেয়ে নন, তিনি এক সম্ভাবনার প্রতীক, যিনি প্রমাণ করেছেন মহাকাশে যাত্রার স্বপ্ন পুরুষদের একমাত্র নয়। তাঁর এই কাহিনী বাংলাদেশের নারীদের জন্য শক্তিশালী বার্তা, যে যথাযথ প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমে যে কেউ সফল হতে পারে।
মারিয়া