ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুন গ্রহ গঠনের সম্ভাব্য স্থান শনাক্ত করলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ০২:৪৭, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৬:১৮, ১১ জুন ২০২৫

নতুন গ্রহ গঠনের সম্ভাব্য স্থান শনাক্ত করলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

ছবি: সংগৃহীত

একটি নতুন গ্যাস জায়ান্ট গ্রহ গঠনের সম্ভাব্য স্থান শনাক্ত করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। চিলিতে অবস্থিত ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির (ESO) ‘ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ’ (VLT) ব্যবহার করে এই অসাধারণ আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ জার্নালে।

গবেষক দলটি জানিয়েছে, নবগঠিত গ্রহটি বৃহস্পতির তুলনায় অনেক গুণ বেশি ভরের হতে পারে এবং এটি একটি তরুণ নক্ষত্রকে ঘিরে থাকা বিশাল গ্যাস ও ধুলোর ডিস্কের মধ্যে গঠিত হচ্ছে। এ আবিষ্কার নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব গ্যালওয়ের গবেষক ড. ক্রিশ্চিয়ান গিনস্কি।

গ্রহ গঠনের মুহূর্তের দুর্লভ চিত্র

নির্বিচার ছড়ানো ইনফ্রারেড আলো ব্যবহার করে গ্রহ গঠনের এই মূহূর্তটি প্রথমবারের মতো চিত্রায়িত করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। ESO ইতোমধ্যে এই চিত্রটিকে তাদের ‘সপ্তাহের ছবি’ হিসেবে প্রকাশ করেছে, যা ইতোমধ্যেই বৈজ্ঞানিক মহলে সাড়া ফেলেছে।

এই ডিস্কটি নক্ষত্র থেকে প্রায় ১৩০ অ্যাস্ট্রোনমিকাল ইউনিট (AU) পর্যন্ত বিস্তৃত। মনে রাখা দরকার, ১ AU হলো পৃথিবী ও সূর্যের গড় দূরত্ব, যা প্রায় ৯৩ মিলিয়ন মাইল। তুলনার জন্য, সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুন সূর্য থেকে মাত্র ৩০ AU দূরে অবস্থান করে।

চিত্রে দেখা গেছে, ডিস্কটির মাঝে একটি উজ্জ্বল রিং এবং প্রায় ৫০ AU জায়গাজুড়ে একটি ফাঁকা অংশ—যা গ্রহ গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার নিদর্শন বলে মনে করছেন গবেষকেরা।

‘এই দৃশ্য ব্যতিক্রমী’—গবেষক দলের মত

গবেষণা দলের প্রধান ড. গিনস্কি বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি সম্ভাব্য গ্রহ-গঠনের ডিস্ক পর্যবেক্ষণ করেছি। তবে এই ডিস্কটি বিশেষভাবে আলাদা—কারণ এতে একসাথে রিং এবং সর্পিল বাহুর (spiral arms) উপস্থিতি রয়েছে, যা তাত্ত্বিকভাবে একটি গ্রহ গঠনের সময় ডিস্কের গঠনে যেমনটি ঘটার কথা, ঠিক তেমনই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমন আবিষ্কার আমাদের গ্রহ গঠনের প্রক্রিয়া বোঝার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। এমনকি এটি আমাদের নিজেদের সৌরজগত কীভাবে গঠিত হয়েছিল তা বোঝার পথও প্রশস্ত করে।’

এবার লক্ষ্য: নতুন গ্রহের সরাসরি চিত্র

গবেষকেরা এখন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)-এর উচ্চ সংবেদনশীলতা ব্যবহার করে নতুন গঠিত গ্রহটির সরাসরি ছবি তোলার চেষ্টা করবেন। যদি ডিস্কে থাকা গ্রহটির অস্তিত্ব নিশ্চিত করা যায়, তবে বিজ্ঞানীরা গ্রহ ও ডিস্কের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করতে পারবেন।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×