
ছবি : সংগৃহীত
গুগল গত বুধবার তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত সর্বশেষ উন্নয়ন প্রকাশ করেছে, যা সবাইকে আরও বুদ্ধিমান, কর্মক্ষম ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক এআই ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে পারে।
গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই বলেন, "আরও বেশি বুদ্ধিমত্তা এখন সবার জন্য, আমরা এখন এআই প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের এক নতুন পর্বে প্রবেশ করেছি যেখানে দশকের পর দশক ধরে করা গবেষণা এখন মানুষ, ব্যবসা এবং সম্প্রদায়ের জন্য বাস্তবে পরিণত হচ্ছে ।”
সেখানে প্রধান ঘোষণাগুলোর মধ্যে রয়েছে গেমিনি ২.৫ সংস্করণ, স্মার্ট গুগল সার্চ, জেনারেটিভ এআই মিডিয়া টুলস, গেমিনি অ্যাপ আপডেট এবং গেমিনি-নির্ভর গুগল ওয়ার্কস্পেস।
গেমিনি ২.৫-এ নতুন বৈশিষ্ট্য:
- ডিপ থিঙ্ক (Deep Think): উন্নত যুক্তি বিশ্লেষণ ক্ষমতা, যা কোডিং ও গণিতের মতো জটিল কাজে সহায়তা করে
- নেটিভ অডিও জেনারেশন: সরাসরি শব্দ তৈরি করতে সক্ষম
স্মার্ট গুগল সার্চ:
গেমিনি চালিত নতুন AI মোড যুক্ত হয়েছে স্মার্ট গুগল সার্চে।, যা ব্যবহারকারীদের আরও গভীর ও ইন্টারঅ্যাকটিভ অনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা দেয়। এ ছাড়া, এআই ওভারভিউ এখন ২০০টিরও বেশি দেশে এবং ৪০টিরও বেশি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে সার্চ এখন কেবল তথ্যের উৎস না থেকে বুদ্ধিমত্তার একটি ইঞ্জিনে রূপ নিচ্ছে, যেখানে ভিডিও বোঝার ক্ষমতা ও স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের মতো নতুন ফিচারও যুক্ত হচ্ছে।
জেনারেটিভ এআই মিডিয়া টুলস: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কনটেন্ট নির্মাতাদের ক্ষমতায়নের জন্য তৈরি হয়েছে জেনারেটিভ এআই মিডিয়া টুলস । যার মধ্যে রয়েছে
- ইমেজেন ৪ (Imagen 4): উচ্চ মানের ছবি তৈরি করে
- ভিও ৩ (Veo 3): সিনেমাটিক ভিডিও তৈরিতে সক্ষম
- লিরিয়া ২ (Lyria 2): এআই দিয়ে তৈরি সঙ্গীত
এই টুলসগুলো ফ্লো (Flow) নামের নতুন এআই-চালিত চলচ্চিত্র নির্মাণ প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে, যেখানে ব্যবহারকারী শুধু ভাষা ও রেফারেন্স দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
গেমিনি অ্যাপ ও প্রজেক্ট অ্যাস্ট্রা:
নতুন গেমিনি অ্যাপে যুক্ত হয়েছে ক্যামেরা ইনপুট, স্ক্রিন শেয়ারিং এবং প্রকৃত পরিবেশ বোঝার ক্ষমতা। এর মাধ্যমে গেমিনি এখন ব্যবহারকারীর আশেপাশের তথ্য বুঝে ভবিষ্যৎ প্রয়োজনও অনুমান করতে পারে। এটি সমস্যা সমাধান, কনটেন্ট তৈরি এবং ডিজিটাল জীবন পরিচালনায় সহায়ক হবে।
গুগল ওয়ার্কস্পেসে গেমিনির সংযোজন:
এই সংযোজনের ফলে একটি উন্নত সংস্করণ পাওয়া গেছে যা আরও সহজবোধ্য এবং বুদ্ধিদীপ্ত। এই আপডেটের কারণে, জেমিনি এখন ব্যবহারকারীর আশপাশের পরিবেশ আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং তাদের পরবর্তী প্রয়োজন কী হতে পারে তা পূর্বানুমান করতে পারে । এতে ক্যামেরা ইনপুট, স্ক্রিন শেয়ারিং এবং প্রোজেক্ট অ্যাস্ট্রার ‘ওয়ার্ল্ড মডেলিং’ যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা সমস্যা সমাধান, কনটেন্ট তৈরি এবং তাদের ডিজিটাল জীবন পরিচালনার মতো নানা কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে পারেন। যেমন
- Gmail: ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্মার্ট রিপ্লাই
- Google Meet: বক্তৃতা অনুবাদ
- ডকস ও অন্যান্য অ্যাপে: গবেষণা, পরামর্শ ও উন্নত লেখার সুবিধা
- নতুন Vids অ্যাপ: স্লাইড, ভয়েস ও এআই দিয়ে শর্ট ভিডিও তৈরি
এই ঘোষণাগুলোর মাধ্যমে গুগল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে মানুষের প্রতিদিনের জীবনে আরও গভীরভাবে যুক্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছে।
সা/ই