ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

যে বিশেষ পরিস্থিতিতে মহানবী (সা.) রোজা ভেঙেছিলেন

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ৫ মার্চ ২০২৫

যে বিশেষ পরিস্থিতিতে মহানবী (সা.) রোজা ভেঙেছিলেন

প্রতীকী ছবি

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে রোজা, যা পালন করে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। রোজা ভঙ্গকারীদের জন্য আল্লাহ কঠিন শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে ইতিহাসে দেখা যায়, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের দুটি যুদ্ধে রোজা ভেঙেছিলেন এবং সাহবিদেরকেও তা করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। 

ইসলামের ইতিহাসে রমজান মাস শুধু আত্মশুদ্ধির নয়, ত্যাগ ও বীরত্বেরও এক অনন্য উদাহরণ বটে। এই রমজান মাসেই সংঘটিত হয়েছিল ইসলামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ- বদরের যুদ্ধ ও মক্কা বিজয়ের অভিযান, যেখানে রসুল (সা.) এবং তাঁর সাহাবিগণ যুদ্ধের প্রয়োজনে রোজা ভাঙেছিলেন।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসে যুদ্ধকালীন বা কঠিন পরিস্থিতিতে রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে, যার স্পষ্ট উদাহরণ মুসলিম ইতিহাসের এই তাৎপর্যপূর্ণ যুদ্ধ দুটি।

বদরের যুদ্ধ মুসলিম বাহিনীর প্রথম বিজয় এবং সবচেয়ে বড় যুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। রসুল (সা.) এর হিজরতের দুই বছর পর ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই রমজান মুসলিম এবং কুরাইশ বাহিনীর মধ্যে বদরের প্রান্তরে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কুরাইশদের ১০০ সন্যের বিপরীতে লড়েছিল মাত্র ৩১৩ জন সাহাবি।

মহানবী সাহাবিদের যুদ্ধে কৌশল শেখান এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দোয়া করেন। যুদ্ধ শুরু হলে মুসলামগণ সাহসিকতার সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং আল্লাহর সাহায্য ও ফেরেশতাদের সহায়তায় মুসলিম বাহিনী শত্রুদের পরাজিত করে। যুদ্ধের কৌশলগত গুরুত্ব ও শারীরিক ক্লান্তির কথা বিবেচনা করে নবীজি (সা.) ও অনেক সাহাবি রোজা ভেঙেছিলেন।

ইসলামের আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনা মক্কা বিজয়। হিজরি ৮ সালের রমজান মাসে মহানবী (সা.) ১০,০০০ মুসলিম সৈন্য নিয়ে গোপনে মক্কার দিকে অগ্রসর হন। দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর মক্কার কাছাকাছি পৌঁছালে প্রচণ্ড গরম ও ক্লান্তির কারণে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রকাশ্যে পানি পান করেন এবং সাহাবিদেরকেও রোজা ভাঙতে বলেন।

শত্রুপক্ষ যাতে প্রস্তুতি নিতে না পারে, সেজন্য অভিযানটি সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়। মুসলিম বাহিনী মক্কার চারপাশ থেকে প্রবেশ করে শত্রুদের ঘিরে ফেলে এবং ২০ রমজান বিনা বাধায় মক্কা দখল করে। এরপর তিনি শত্রুদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন এবং মক্কাকে ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

এই দুটি ঘটনা প্রমাণ করে যে, ইসলামে যুদ্ধ, দীর্ঘ সফর বা কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে এবং পরে তার কাজা আদায় করে নেয়া যায়।

 

সূত্র: https://shorturl.at/flXuI

রাকিব

×