
সংগৃহীত
ইসলামে রোজা হলো আত্মসংযম ও ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। আল্লাহ তায়ালা মানুষের ক্ষমতা ও দুর্বলতা দুটোই জানেন, তাই রোজার বিধানেও সহজতার ব্যবস্থা রেখেছেন।
রোজা ভাঙ্গার মূল শর্ত হলো –
ইচ্ছাকৃতভাবে খাবার, পানীয় বা রোজা ভঙ্গকারী কাজ করা। কিন্তু যদি কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুলে খায়, পান করে, বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু ঘটে, তাহলে রোজা ভাঙবে না। কারণ এতে তার ইচ্ছার কোনো ভূমিকা নেই।
সিয়ামরত অবস্থায় এমন কিছু অজানা বৈধ কাজসমূহ যা করলে রোজা ভঙ্গ হয় না।
|| ভুলে_পানাহার ||
কেউ যদি ভুলে পানাহার করে ফেলে তবে এতে সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না। তবে স্মরণ আসা মাত্রই সর্বপ্রকার আহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
রাসূল ﷺ বলেন-
সিয়াম পালনরত অবস্থায় যদি কেউ ভুলে পানাহার করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে খাইয়েছেন এবং পান করিয়েছেন।[বুখারি -১৮৩১, মুসলিম -১১৫৫]
|| হিজামা ||
সিয়ামরত থাকাকালীন হিজামা করলে সিয়ামের কোন সমস্যা হয় না।
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
(রাসূলুল্লাহ ﷺ) ইহরাম অবস্থায় হিজামা করিয়েছেন এবং তিনি সিয়ামরত অবস্থায়ও হিজামা করিয়েছেন। [বুখারি-১৮৩৬]
|| অনিচ্ছাকৃত_বমি ||
কেউ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তবে তাতে সিয়ামের কোন সমস্যা হবে না। অনিচ্ছাকৃতভাবে বা বাধ্য হয়ে যে ব্যক্তি সিয়ামরত অবস্থায় বমি করবে, তাকে কাযা করতে হবে না। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক বমি করবে তাকে কাযা করতে হবে। [আবু দাউদ-২৩৮০ ,তিরমিযি -৭২০]
|| নিজ_স্ত্রীকে_চুমু_দেয়া ||
উত্তেজনা ব্যতিরেকে নিজ স্ত্রীকে চুমু দেয়া জায়েজ। এতে সিয়ামের কোন সমস্যা হয় না।
আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়ামরত অবস্থায় চুমু খেতেন এবং সিয়ামরত অবস্থায় আলিঙ্গন করতেন। তবে নিজ আবেগ উত্তেজনার উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল তোমাদের সকলের চেয়ে বেশি। [বুখারি-১৯২৭]
তবে যুবকদের এটা থেকে দূরে থাকাই নিরাপদ।
কেননা হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত-
জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সিয়ামরত অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বনের ব্যপারে প্রশ্ন করলে তিনি অনুমতি দেন। অপর একজন এরূপ প্রশ্ন করলে তাকে নিষেধ করেন। তখন আমরা দেখলাম যে, যাকে অনুমতি দিলেন তিনি ছিলেন বৃদ্ধ আর যাকে নিষেধ করেন তিনি ছিলেন যুবক। [আবু দাউদ-২৩৮৭]
উম্মাহর অনেক মুহাক্কিক আলেম বলেন, মূলত এখানে বয়সের চেয়ে কারো উত্তেজিত হওয়ার সম্ভাব্যতা দেখে হুকুম নির্ধারণ হবে। সাধারণত বৃদ্ধ লোকের উত্তেজিত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছে আর যুবককে নিষেধ করা হয়েছে ; যেহেতু যুবকদের শারীরিক উত্তেজনা প্রবল থাকে। তবে কেউ যদি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণের ব্যপারে আত্মবিশ্বাস রাখে তবে তার জন্য জায়েজ।
উম্মাহর অনেক মুহাক্কিক আলেম বলেন, মূলত এখানে বয়সের চেয়ে কারো উত্তেজিত হওয়ার সম্ভাব্যতা দেখে হুকুম নির্ধারণ হবে। সাধারণত বৃদ্ধ লোকের উত্তেজিত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছে আর যুবককে নিষেধ করা হয়েছে ; যেহেতু যুবকদের শারীরিক উত্তেজনা প্রবল থাকে। তবে কেউ যদি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণের ব্যপারে আত্মবিশ্বাস রাখে তবে তার জন্য জায়িজ।
|| স্বপ্নদোষ ||
সিয়ামরত ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হলে এতে তার সিয়ামের কোন সমস্যা হয় না।
রাসূল ﷺ বলেন -
তিনটি জিনিস সিয়াম ভঙ্গ করে না। শিঙা লাগানো (হিজামা), বমি করা ও স্বপ্নদোষ হওয়া। [তিরমিযি-৭১]
ইসলামের বিধান মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়, বরং সহজ ও সহনশীল রাখার জন্য। তাই ভুলবশত কোনো কাজ করলে আল্লাহ তা মাফ করে দেন।
হাদিসে আছে:
"আমার উম্মতের ভুল ও অনিচ্ছাকৃত কাজ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।" (ইবনে মাজাহ)