
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ইসলামী শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা আবারও জোরালোভাবে তুলে ধরলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন তাঁরা বাংলাদেশের সকল ইসলামী শক্তি, দেশপ্রেমিক শক্তি, বাংলাদেশের সকল মানবতা শক্তিকে আমরা এক কাতারে এনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য, মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে নির্বাচনে অবতীর্ণ হবেন।
তিনি বলেন, “আমরা যদি রাজনৈতিকভাবে দুর্বল থাকি তাহলে বারবার এসব বিপদ চলে আসবে। অতএব আজকে এই সেমিনারের মূল স্পিরিট হলো, বাংলাদেশের সকল ইসলামী শক্তি, দেশপ্রেমিক শক্তি, বাংলাদেশের সকল মানবতা শক্তিকে আমরা এক কাতারে এনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য, মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে নির্বাচনে অবতীর্ণ হব ইনশাআল্লাহ।”
মাওলানা আতাউর রহমান আরও বলেন, “আমরা যারা দেশকে, ইসলামকে ভালোবাসি, মানুষকে যারা ভালোবাসি,আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকি তাহলে এমন বিপদ আপদ, এমন সমস্যা দেশবিরোধী, ইসলামবিরোধী বা মানবতা বিরোধী বারবার সামনে আসবে। এইজন্যে আমাদের মনে হয় একটি বার্তা যাওয়া উচিত যে আমরা দেশের জন্যে, দেশের মানুষের কল্যাণে, ইসলামের জন্যে আগামীতে আমরা ইনশাআল্লাহ ঐক্যবদ্ধ থাকবো। আশা করি বাংলাদেশের মানুষ সেই প্রত্যাশা করে।”
নারী সংস্কার কমিশন ও সিডো সনদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মাওলানা আতাউর রহমান বলেন, “বিশেষ করে জুলাই বিপ্লব, ৫ই আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যে প্রত্যাশা জেগে উঠেছে, মানুষ অতীতের বিগত ৫৩ বছর যেভাবে দেশ শাসন হয়েছে সেটা আর চায় না। কারণ আজকে এই নারী সংস্কার কমিশনের যে প্রস্তাবনা এসেছে, এটা কিন্তু নতুন কিছু নয়। ১৯৭৯ সাল থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এই নারী নীতি, এই নারী প্রস্তাব পাশ করতে হলে কোরআন সংস্কার করতে হবে। আমরা কি কোরআন সংস্কারের জন্য কাউকে অধিকার দিব? দিব না। এখানে অন্যান্য ধর্মের যারা রয়েছে তারা জানে তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ সংস্কার হয়েছে, বিকৃত হয়ে গেছে। একমাত্র অবিকৃত আছে কোরআন। এই জাতিসংঘ, এই সিডো সনদে মৌলিকভাবে দুই জায়গায় আঘাত করা হয়েছে,উত্তরাধিকার ও বৈবাহিক সম্পর্ক। কোরআনে আল্লাহ স্পষ্টভাবে উত্তরাধিকার কিভাবে বণ্টিত হবে সে নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে হাত দেওয়ার অধিকার কারো নাই। বৈবাহিক মানুষের মধ্যে পরিবার কিভাবে গঠন হবে, সে বিষয়েও কোরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। এই দুটো বিষয়ে কারো সংস্কারের অধিকার নেই।”
তিনি উল্লেখ করেন, “১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকার সিডো সনদে স্বাক্ষর করেছে কিছু আপত্তিসহ। পরে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কিছু আপত্তি তুলে নেয়। ২০১১ সালে গোটা সিডো সনদকে গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার একটি নারী নীতিমালা আনে। কিন্তু আমাদের আন্দোলনের মুখে ২০০১ সালে তারা পিছিয়ে যায়। বর্তমানে তথাকথিত নারী সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে আবারও সেই জাতিসংঘের সিডো সনদকে সামনে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
আতাউর রহমান বলেন, “আমাদের জীবন যেতে পারে। কিন্তু আমরা কোরআনের বিধানে হাত দেওয়ার অধিকার কাউকে দিব না ইনশাআল্লাহ। মনে রাখতে হবে, আমরা যদি রাজনৈতিকভাবে দুর্বল থাকি তাহলে বারবার এসব বিপদ চলে আসবে।”
তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশের সকল ইসলামী শক্তি, দেশপ্রেমিক শক্তি, বাংলাদেশের সকল মানবতা শক্তিকে আমরা এক কাতারে এনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য, মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচনে অবতীর্ণ হব ইনশাআল্লাহ।”
সূত্র:https://tinyurl.com/3542y7m3
আফরোজা