
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র চীন ও আমেরিকার মধ্যকার টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। বাণিজ্য, প্রযুক্তি কিংবা ভূরাজনীতি—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই দুই দেশের মুখোমুখি অবস্থান বিশ্বব্যবস্থাকে বারবার নাড়া দিয়েছে। তবে সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে যদি চিন্তা করা হয়—এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে আসলে কী ঘটবে? কাকে এগিয়ে রাখা যায় সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে?
অর্থনীতি ও সামরিক বাজেট
যেকোনো দেশের সামরিক শক্তি অনেকটাই নির্ভর করে তার অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ওপর। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রায় ২৫ লাখ কোটি ডলার, যেখানে চীনের জিডিপি ১৮ লাখ কোটি ডলার।
সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্র বার্ষিক ব্যয় করে গড়ে ৮৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, যা বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের ৪০%। অপরদিকে, চীন খরচ করে ২৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার, অর্থাৎ আমেরিকার এক-তৃতীয়াংশেরও কম।
সেনা সংখ্যা ও সরঞ্জাম
যদিও বাজেটের দিক থেকে আমেরিকা এগিয়ে, সেনা সংখ্যায় চীন স্পষ্টভাবে শক্তিশালী।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA): ২০ লাখ সক্রিয় সেনা
আমেরিকার সামরিক বাহিনী: ১৩ লাখ সদস্য (সেনা, নৌ, বিমান ও উপকূলরক্ষী বাহিনী মিলিয়ে)
ট্যাংক:
চীন: ৫,০০০
আমেরিকা: ৪,৬০০
যুদ্ধবিমান:
আমেরিকা: ১,৮০০
চীন: ১,২০০
হেলিকপ্টার:
আমেরিকা: ৫,৭০০
চীন: ৯১৩
যুদ্ধজাহাজ:
চীন: ৭৩০
আমেরিকা: ৪৭২
পরমাণু অস্ত্র:
আমেরিকা: ৫,২২৪
চীন: ৪১০
কৌশলগত সুবিধা ও সাইবার ক্ষমতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন সামরিক শক্তিতে কিছু ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও সাইবার যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছে একধরনের ‘লুকানো অস্ত্র’। সাইবার হামলার সক্ষমতায় চীন বেশ পারদর্শী, এবং সম্ভাব্য যেকোনো সংঘর্ষে এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
যুদ্ধ কোথায় হতে পারে?
চীন ও আমেরিকার ভৌগোলিক দূরত্ব প্রায় ১১,৩০০ কিলোমিটার। সেক্ষেত্রে সরাসরি সীমান্ত সংঘর্ষের সম্ভাবনা নেই। তবে সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুদ্ধের মূখ্য ক্ষেত্র হতে পারে তাইওয়ান।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে, অন্যদিকে আমেরিকা তাইওয়ানকে সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে সমর্থন দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি চীন তাইওয়ানে সামরিক হামলা চালায়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে আমেরিকায় সাইবার হামলাও চালাতে পারে—যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে ও সমন্বিত প্রতিরোধ গঠনে ব্যর্থ হয়।