
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমান ব্যস্ত জীবনের চাপে অনেকেই ঘুমজনিত সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা আজকাল বেশ সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিদ্রা শুধু শারীরিক দুর্বলতা নয়, মানসিক সুস্থতার ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
ইনসমনিয়া কী?
ইনসমনিয়া হলো একটি ঘুমজনিত সমস্যা, যেখানে ব্যক্তির ঘুম আসতে দেরি হয়, ঘুম দীর্ঘস্থায়ী হয় না, বা খুব ভোরে ঘুম ভেঙে যায় এবং এরপর ঘুমাতে পারা যায় না। এটি স্বল্পমেয়াদী (acute) অথবা দীর্ঘমেয়াদী (chronic) হতে পারে।
লক্ষণসমূহ:
*রাতে ঘুম আসতে বিলম্ব হওয়া।
*ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়া।
*ভোরে ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং পুনরায় ঘুমাতে না পারা।
*সারাদিন ক্লান্তিভাব, মনোযোগের ঘাটতি।
*বিরক্তি, উদ্বেগ বা হতাশা অনুভব করা।
ইনসমনিয়ার সম্ভাব্য কারণ:
*মানসিক চাপ ও উদ্বেগ।
*বিষণ্নতা।
*অনিয়মিত জীবনযাপন।
*অতিরিক্ত মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহারে মস্তিষ্ক উত্তেজিত থাকা।
*ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল সেবন।
*শারীরিক অসুস্থতা বা ব্যথা।
চিকিৎসা ও প্রতিকার:
১. জীবনযাত্রার পরিবর্তন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জাগা, ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন এড়ানো এবং মোবাইল/ল্যাপটপ ব্যবহার না করা।
২. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি দীর্ঘদিন ঘুমের সমস্যা থাকে, তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৩. CBT (Cognitive Behavioral Therapy): এটি ইনসমনিয়ার জন্য কার্যকর মানসিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা চিন্তাভাবনা ও আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘুম উন্নত করে।
৪. ঔষধ: কিছু ক্ষেত্রে ঘুমের ঔষধ বা সাপ্লিমেন্ট (যেমন মেলাটোনিন) ব্যবহার করা যায়, তবে এটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণযোগ্য।
সুস্থ ঘুমের জন্য করণীয়:
*ঘুমের আগে উষ্ণ পানিতে গোসল বা হালকা বই পড়া।
*ঘুমের ঘরটি শান্ত, অন্ধকার ও ঠান্ডা রাখা।
*প্রতিদিনের কিছু সময় মেডিটেশন বা যোগব্যায়ামে ব্যয় করা।
*সন্ধ্যার পর ভারী খাবার না খাওয়া।
ঘুম একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা শরীর ও মনের পূর্ণ বিশ্রাম নিশ্চিত করে। ইনসমনিয়াকে অবহেলা না করে সময়মতো ব্যবস্থা নিলে সহজেই সুস্থ ও স্বাভাবিক ঘুম ফিরে পাওয়া সম্ভব।
রিফাত