
ছবি: সংগৃহীত
মাথাব্যথা—একটি অতি সাধারণ উপসর্গ। আমাদের প্রায় সকলেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে এই যন্ত্রণাদায়ক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। তবে সব মাথাব্যথা এক নয়। অনেক সময় এটি হতে পারে দৈনন্দিন চাপের ফল, আবার অনেক সময় তা হতে পারে কোনো গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার পূর্বাভাস।
মাথাব্যথা কেন হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাথাব্যথার মূল কারণগুলো হচ্ছে:
- মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
- ঘুমের অভাব
- পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)
- দীর্ঘ সময় মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখ রাখা
- সাইনাসের সংক্রমণ
- চোখের সমস্যা (চশমার প্রয়োজন)
- মাইগ্রেন
- উচ্চ রক্তচাপ
- হরমোন পরিবর্তন
- ব্রেইন টিউমার বা ইনফেকশন (বিরল ক্ষেত্রে)
দ্রুত মাথাব্যথা দূর করার উপায়
সাধারণ মাথাব্যথা হলে কয়েকটি ঘরোয়া এবং প্রাথমিক উপায়ে স্বস্তি পাওয়া সম্ভব। যেমন:
- পানি পান করুন: অনেক সময় শরীরে পানি ঘাটতির কারণে মাথাব্যথা হয়।
- নিরিবিলি ও অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন: বিশেষ করে মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর।
- ঠান্ডা বা গরম সেঁক: ঘাড়, কপাল বা চোখে সেঁক দিলে স্বস্তি পাওয়া যায়।
- চোখ ও ঘাড়ের বিশ্রাম: স্ক্রিনের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ ও ঘাড়ের পেশিতে চাপ পড়ে।
- হালকা খাবার গ্রহণ: খালি পেটে মাথাব্যথা হতে পারে।
- ব্যথানাশক ওষুধ: প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন সেবন করা যেতে পারে, তবে নিয়মিত নয়।
কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?
নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি দেখা গেলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:
- হঠাৎ তীব্র, ভিন্নধরনের মাথাব্যথা শুরু হওয়া
- মাথাব্যথার পাশাপাশি জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া
- চোখে ঝাপসা দেখা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, স্মৃতিভ্রষ্টতা
- মাথায় আঘাত লাগার পর শুরু হওয়া ব্যথা
- প্রতিদিন একই সময় বা অবস্থায় মাথাব্যথা হওয়া
- সাধারণ ওষুধে স্বস্তি না পাওয়া
- মাথাব্যথার পাশাপাশি বমি, দুর্বলতা বা খিঁচুনি
ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, “বেশিরভাগ মাথাব্যথা সাময়িক এবং নিরীহ হলেও উপসর্গ বুঝে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাথাব্যথা হতে পারে স্ট্রোক বা ব্রেইন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ।”
মাথাব্যথা যেমন সাধারণ, তেমনই হতে পারে ভয়াবহ সমস্যার আগাম ইঙ্গিত। তাই উপেক্ষা না করে ব্যথার প্রকৃতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া—এই দুই-ই জরুরি।
এসএফ