
৫ আগস্টের তরুণরা আমাদের যা দিয়েছে, তা কখনও ভোলার নয়। যতটুকু তারা পেরেছে, তার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার।
সম্প্রতি রংপুরে একক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যদি কোথাও কোনো ব্যর্থতা থেকে থাকে, সেটা তরুণদের একার নয়—এটা আমাদের সবার সম্মিলিত ব্যর্থতা। তাই আজকের দিনে সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে তরুণদের রক্ষা করা, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের বিরুদ্ধে চলমান অপপ্রচার ও কুপ্রচারণার জবাব দেওয়া।
ফরহাদ মজহার স্পষ্টভাবে জানান, তিনি এনসিপির নির্বাচনকেন্দ্রিক কৌশল সমর্থন করেন না। তার ভাষায়, “নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো বিপ্লব আসে না। পৃথিবীর কোথাও—ফরাসি বিপ্লব, মার্কিন বিপ্লব বা ইরানি বিপ্লব—কোনোটাই ভোটের মাধ্যমে হয়নি। নির্বাচন দিয়ে রাষ্ট্র বদলায় না।”
তিনি নির্বাচনের পরিবর্তে একটি বিকল্প রাষ্ট্রগঠনের প্রস্তাব তুলে ধরেন। তার মতে, গণসার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানাতে হবে। তিনি বলেন, “যদি ড. ইউনূস একটি নতুন প্রস্তাব না দেন, তবে আমাদের তরফ থেকেই ঘোষণা দিতে হবে।”
এই প্রস্তাবিত ঘোষণায় তিনি তিনটি মৌলিক শর্ত বা নীতি তুলে ধরেন, যা অর্ধপাতার একটি সংবিধান হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা যেতে পারে—
১. রাষ্ট্র এমন হবে, যেখানে ব্যক্তির অধিকার ও মর্যাদা হরণ করা যাবে না।
২. রাষ্ট্র এমন কোনো আইন বা নীতি প্রণয়ন করতে পারবে না, যা প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে।
৩. জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করে এমন কোনো আইনও রাষ্ট্র প্রণয়ন করতে পারবে না।
ফরহাদ মজহারের ভাষায়, “আমাদের ভারী সংবিধান দরকার নেই। দরকার এমন একটি সাধারণ ঘোষণা, যা একজন গরিব কৃষকও পড়ে বলতে পারেন—হ্যাঁ, এটাই তো আমার কথা।
আলোচনার শেষে ফরহাদ মজহার আবারও ৫ আগস্টের তরুণদের স্মরণ করেন—যে তরুণরা আমাদের চোখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়েছে, তাদের ঋণ আমরা কখনো ভুলবো না।
এসএফ