ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমাদের দাবির আওয়াজ গণভবন-বঙ্গভবনে পৌঁছাতে হবে’

প্রকাশিত: ২০:০১, ১১ আগস্ট ২০২৩

‘আমাদের দাবির আওয়াজ গণভবন-বঙ্গভবনে পৌঁছাতে হবে’

সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে রাজধানীতে গণমিছিল করেছে বিএনপি। শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে পৃথক ২টি গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। 

উত্তর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান সরকারের পদত্যাগই একমাত্র দাবি বলে উল্লেখ করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের দাবির আওয়াজ গণভবন-বঙ্গভবনে পৌঁছাতে হবে। এবার আর প্রহসনের নির্বাচন করতে দেবে না জনগণ। তারা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। 

বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে থেকে শুরু করে রামপুরা হয়ে মালিবাগ আবুল হোটেল পর্যন্ত গণমিছিল করে। একই সময়ে  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু করে খিলগাও রেলগেট হয়ে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত গণমিছিল করেএ ছাড়া বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোও রাজধানীতে পৃথক পৃথক অবস্থানে গণমিছিল করে।বিএনপির মিছিল

=পূর্বনির্ধারিত সময় বেলা ২টার মধ্যেই গণমিছিলে অংশ নিতে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। বিকেল ৩টায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু করে সাড়ে ৩টা থেকেই গণমিছিল শুরু করা হয়। গণমিছিলকারীরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যায়। রাস্তা দখল করে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গণমিছিল করায় বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত কুড়িল থেকে শুরু করে, সতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, আবুল হোটেল, মালিবাগ রেলগেট, খিলগাও রেলগেট, কমলাপুর ও গোলাপবাগ হয়ে সায়দাবাদ পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ যানজট। এ কারণে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রহসনের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। তবে এবার জনগণ আর তাদের সেই সুযোগ আর দেবে না।  এবার ভোটের নামে আর কোনো খেলা খেলতে দেয়া হবে না। এজন্য বর্তমান সরকারকে সরে যেতে আহ্বান জানাচ্ছি। 

ফখরুল বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেরিক্যাচাল করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আবারও ক্ষমতায় যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবার আর জনগণ তা হতে দেবে না। সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তবে যত নির্যাতন, গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করুক আন্দোলন থামানো যাবে না। জনগণ এবার তাদের দাবি আদায় করবে। এবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই। 

সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে  সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগই বিএনপির প্রধান দাবি। শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বর্তমান সরকার পৈশাচিক কায়দায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ দিয়ে হামলা করছে। 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে গণমিছিলে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, আতাউর রহমান ঢালী, জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিল শুরুর আগে কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হলে তা প্রতিহত করা হবে। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। 

মির্জা আব্বাস বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আমরা মানি না। কারণ, তারা নিশিরাতের ভোটের সরকারের নির্বাচন কমিশন। তারা সরকারের অন্যায় আইন আদেশ মানছে। তাদের নির্বাচন করার সাংবিধানিক অধিকার নেই। তারা নির্বাচন করতে চাইলে সেটাকে অবশ্যই অবশ্যই প্রতিহত করবো। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বাংলাদেশ কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না।

মির্জা আব্বাস বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। তারা সরাসরি গুলি করছে। এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মসূচি চলতে থাকবে। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেশে গণমিছিলে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ডা. জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল,প্র্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

সমমনা দলগুলোর গণমিছিল : বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দলগুলোর মধ্যে ১২ দলীয় জোট বিকেল ৪টায় বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে থেকে গণমিছিল বের করে। একই সময়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট গণমিছিল শুরু করে পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে। এলডিপি বিকেল ৪টায় কাওরান বাজার এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি অফিসের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করে। আর গণফোরম ও পিপলস পার্টি গণমিছিল শুরু করে বিকেল ৩টায় মতিঝিল নটরডেম কলেজের উল্টো দিকে গণফোরাম কার্যালয়ের সামনে থেকে। 

এছাড়াও লেবার পার্টি সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে, গণ অধিকার পরিষদ(একাংশ) বিকেল ৩টায় পুরানা পল্টন গণ অধিকার পরিষদ অফিসের সামনে থেকে, গণ অধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে, এনডিএম সন্ধ্যা ৭টায় মালিবাগ মোড় থেকে এবং সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করে।  

সরকার আইন ব্যবহার করে বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে- খসরু:  সরকার আইন ব্যবহার করে বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে  তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের মামলায় সাজা বাতিলের দাবিতে জিয়া পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অসাংবিধানিকভাবে সংবিধান সংশোধন করেছে। তিনি বলেন, তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের মামলার বিষয়ে দেওয়া রায় বিচার বিভাগের তা বাংলাদেশের কেউ বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যার জন্য সরকার আবারও ক্ষমতায় থাকতে পুলিশকে কাজে লাগাচ্ছে। 

আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ওবায়েদুল ইসলাম প্রমুখ।

আরও পড়ুন >>  

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলাকা ছাড়া সারাদেশে পরীক্ষা চলবে

ডিমের দামে নতুন রেকর্ড

রাজ্যর প্রথম জন্মবার্ষিকীতে অপু বিশ্বাসের উপহার

টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়কের নাম ঘোষণা

 

এসআর

×