সংসদে রওশন এরশাদ
দীর্ঘদিন বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ চ্যালেঞ্জ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র-সমালোচনা হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে যারা সমালোচনা করেছে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও গৌরবের প্রতীক।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার সমাপনি দিনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আরও আলোচনায় অংশ নেন সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও সরকারি দলের জোয়াহেরুল ইসলাম।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। পদ্মা সেতু একটি সাধারণ সেতু নয়, দেশের সক্ষমতা-গৌরবের প্রতীক। আমাদের দেশের মতো ছোট দেশে এত বড় বিশাল স্থাপনা নির্মাণ সত্যিই প্রশংসনীয়। এই সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু যারা সমালোচনা করেছে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে, পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। এই সেতুর কারণে দক্ষিণবঙ্গের পুরো চিত্রই পাল্টে যাবে।
কিছুটা সুস্থ্য হয়ে দেশে ফিরে সংসদে কথা বলতে পারায় আল্লাহ’র দরবারে শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন, গত বছর আগস্ট মাস থেকে অসুস্থ্য হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসাধীন ছিলাম। সুস্থ্য হয়ে আপনাদের মাঝে এসে কথা বলতে পারছি, আল্লাহ’র দরবারে শুকরিয়া। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আমার খোঁজ নিয়েছেন, সেজন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, বন্যা মোকাবেলায় দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। ময়মনসিংহ বিভাগ হলেও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখনও হয়নি। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন আমরাও পারি।
চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন বলেন, ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করেছেন। পদ্মা সেতু আমাদের গৌরব, সক্ষমতা ও অহংকারের সেতু। এই সেতুর কারণে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। রেলপথ-সড়কপথে সংযোগ চালু হলে দক্ষিণবঙ্গের গোটা চিত্রই পাল্টে যাবে। দেশী-বিদেশী সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় পুরো দেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, মাত্র ১৩ বছরেই রাষ্ট্রের সবকিছু বদলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে আমরা পৌঁছে গেছি। পদ্মা সেতুর মধ্যে দিয়ে গোটা দেশ এখন সরাসরি যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। পদ্মা সেতু ইতিহাসের এক গৌরবের অধ্যায়, আবেগ-ভালোবাসা-সাহস-সক্ষমতা ও অহংকারের প্রতীক, আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অসম সাহসী পদক্ষেপ, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। আগামী প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারবেন বঙ্গবন্ধুকন্যার অমর এই কীর্তির কথা। ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আমরা ধিক্কার জানাই।
উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন বৃহৎ শক্তিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিশ্ব ব্যাংকসহ বিরোধীতাকারীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার কৃতজ্ঞ মানুষ প্রাণভরে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দু’হাত তুলে দোয়া করেছেন। দেশের সব মানুষ খুশি, শুধু খুশি নয় এতিমের টাকা আত্মসাতকারী ও দুর্নীতিবাজদের দল বিএনপি। চ্যালেঞ্জ দিয়েই নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে।