
বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, যা এডিস ইজিপ্টাই নামক এক ধরনের মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশাটি সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায় এবং স্বচ্ছ, জমে থাকা পানিতে জন্মায়। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশা কোনো আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ানোর পর ভাইরাসটি নিজের শরীরে গ্রহণ করে। এরপর সেই মশা যদি আরেকজন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তাহলে সেই ব্যক্তি ডেঙ্গু ভাইরাসে সংক্রমিত হন। সাধারণত এই প্রক্রিয়া ঘটতে ৪-১০ দিন সময় লাগে, যাকে ইনকিউবেশন পিরিয়ড বলা হয়। এই ভাইরাসটি সরাসরি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। কেবল মশার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়।
ডেঙ্গুর কিছু লক্ষণ রয়েছে যার মধ্যে প্রধান লক্ষণগুলো হলো- হঠাৎ জ্বর ও প্রচণ্ড মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেশি ও গাঁটে ব্যথা, বমি বমি ভাব ও ত্বকে র্যাশ। প্রতিরোধের উপায়- জমে থাকা পানি অপসারণ করে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, দিনে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মশারি, কয়েল বা রিপেলেন্ট ব্যবহার, ফুলহাতা জামা-কাপড় পরিধান, ঘরের জানালা ও দরজায় মশার জাল ব্যবহার। ডেঙ্গুতে সাধারণত সাপোর্টিভ চিকিৎসা দেওয়া হয়- যেমন জ্বর নিয়ন্ত্রণ, শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্রাম। প্লেটলেট খুব বেশি কমে গেলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফগিং কার্যক্রম, সচেতনতামূলক প্রচার, বিদ্যালয়ে সচেতনতা কর্মসূচি ও স্থানীয় সরকারগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু এখন কেবল স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক ও পরিবেশগত সংকট। প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব নিজের ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা এবং মশার জন্ম রোধ করা। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
আছিয়া রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
প্যানেল