গণমাধ্যমের প্রতিবাদে সাড়া, প্রধান উপদেষ্টার নজরে মানবিক কিশোরীর ঘটনা

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। প্রথম দিনেই রাজধানীর মিরপুরে এক মানবিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক পরীক্ষার্থী। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে রেখে আসতে দেরি হওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছালেও তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। ওই ছাত্রী পরীক্ষা শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সরকারি বাংলা কলেজ কেন্দ্রে পৌঁছান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের বাইরে কেন্দ্রে পৌঁছানোর কারণে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানিয়ে দেন, নিয়মের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

পরিবারের দাবি, মেয়েটির বাবা নেই। পরীক্ষার দিন সকালে তার মা স্ট্রোক করেন। পরিবারের অন্য কেউ পাশে না থাকায় মেয়েটিকেই মাকে হাসপাতালে নিয়ে ছুটতে হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মাকে ভর্তি করে সে দৌড়ে কেন্দ্রে এলেও আর পরীক্ষার হলে ঢোকার সুযোগ হয়নি। 

কেন্দ্রে ঢুকতে না পেরে মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা গণমাধ্যমকর্মীরা ভিডিও ধারণ ও বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেন। মেয়েটি হয়তো মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিল না, তাই ক্যামেরার সামনে আসতে চায়নি।

এই ভিডিও এবং ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই সাংবাদিকদের ভিডিও নিয়ে আপত্তি জানালেও, সেই ভিডিওই পৌঁছে যায় সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে।

আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ঘটনাটি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়, কিশোরীর বাবা নেই, মা স্ট্রোক করেছেন। সে পরীক্ষায় প্রবেশ করতে পারেনি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সম্মিলিত শক্তি কতটা কার্যকর ও মানবিক হতে পারে।

যদি শেষ পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান, তবে সেটি নিঃসন্দেহে সাংবাদিকতা এবং নাগরিক সচেতনতার একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।