
করোনা ভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) একটি রোগ যা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে এই বৈশ্বিক মহামারির সৃষ্টি হয়েছে। চীন থেকেই প্রথম উৎপত্তি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রথম জানা যায়, ৮ মার্চ ২০২০ সালে। প্রায় ৫ বছর আগে প্রথম মৃত্যু ঘটে ১৮ মার্চ ২০২০ সালে। টানা দুই মাস শনাক্তের সংখ্যা তিন অঙ্কের মধ্যে ছিল যা বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ হয়েছিল জুলাই মাসে। ২ জুলাই তারিখে সর্বোচ্চ ৩৪ হাজার ১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। কিন্তু ২০২০ সালে ডিসেম্বরের দিকে নিচের দিকে নামতে থাকে এবং এই সংক্রমণের হার ফেব্রুয়ারিতে ৩ শতাংকের নিচে নেমে এসেছিল। কিন্তু পুরোপুরি কমেনি আবার বাড়তে থাকে এর প্রকটতা। এই পরিপ্রেক্ষিতে দফা দফায় বাড়তে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি। দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এ রোগকে প্রতিহত করতে দেওয়া হচ্ছিল করোনা টিকাসহ তিনটি ডোজ। সঙ্গে বজায় রাখতে বলা হচ্ছিল সামাজিক দূরত্ব। এই দূরত্ব সাধারণত ছয় ফুটের মতো বলা হয়েছিল। এ ভাইরাস সাধারণত শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে তাই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সার্জিক্যাল মাস্ক পরিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে ছিল হাত স্যানিটাইজার দিয়ে ধোয়ার নির্দেশ। করোনা মহামারির ভয়াবহতা কাটিয়ে অতিবাহিত হয়েছে ৫ বছর। ৫ বছর পরে বর্তমান সময়ে যেন এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। ৯ জুন ২০২৫ সালে শনাক্ত করা হয়েছে এই করোনাভাইরাস। খুলনা জেলায় ২ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এই ভাইরাস যেন আবারও ভয়াবহতা সৃষ্টি না করতে পারে এর জন্য দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিবিধ কিছু নিয়ম আছে। শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্তকরণ করা। নাক মুখ ও চোখ হাত দিয়ে স্পর্শ না করা। ফেস মাস্ক ব্যবহার করা। মোবাইল ব্যবহারে সচেতন থাকা। হাত ঘড়ি ও ব্রেসলেট ব্যবহারে সতর্ক থাকা। চলাচলের সময় উন্মুক্ত বর্জ্য কিংবা হাসপাতাল ও অন্যত্র উপস্থিত চিকিৎসা বর্জ্যরে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। হাসপাতালে ও অন্য স্বার্থকেন্দ্রে কর্মরত কর্মচারীদের মুখোশ ও হাত মোজা (পিপিই) পরিধান করতে হবে যাতে ভাইরাল ছড়িয়ে না যায়। করোনাভাইরাস বহনকারী ব্যক্তিদের সম্পর্কে কিছু করণীয় রয়েছে যেগুলো মেনে চললে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা হলেও কম হবে। জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে এমন অবস্থায় ন্যূনতম তিন থেকে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখা। রাস্তায় ও যততত্র থুতু না ফেলা। হাঁচি কাশি দেয়ার সময় রুমাল বা টিস্যু অথবা হাতের ভাঁজের অংশ ব্যবহার করা। করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া এবং প্রয়োজনে কোয়ারেন্টাইনে রাখা। এই ভাইরাস যে কোনো বয়সের মানুষদের মধ্যে হতে পারে তাই জোরদার সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। যাতে এই ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করতে না পারে। জরুরি বিষয় হয়ে উঠুক করোনাভাইরাসের সচেতনতা বৃদ্ধি। ‘রোগ আসবে না ধারের কাছে/ পরব মাস্ক ধুবো হাত।’
সরকারি বি. এল কলেজ, খুলনা থেকে
প্যানেল