ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩৭, ৩ জুন ২০২৫

আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক

সৌদি আরবের পবিত্র মক্কানগরীতে এবার হজ পালিত হচ্ছে ৫ জুন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান, চলাচল ও হজ প্রক্রিয়া পালন করতে হবে সৌদি সরকারের নির্দেশ মোতাবেক।
পবিত্র ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি হচ্ছে হজ। আর্থিকভাবে সচ্ছল, দৈহিকভাবে সক্ষম ও সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য হজ পালন ফরজ করা হয়েছে। সৎপথে উপার্জিত অর্থ দ্বারা হজ পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান এই হজব্রত পালনের লক্ষ্যে সারাবিশ্ব থেকে নানা বর্ণের, নানা ভাষার লাখ লাখ মুসলিম নর-নারী পবিত্র মক্কা নগরীতে সমবেত হন। এবারও হজ পালনের লক্ষ্যে সারাবিশ্ব থেকে অগণিত মুসলমান সৌদি আরবে মহান আল্লাহতালার নির্দেশ পালনে একত্রিত হয়েছেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানও অংশ নিয়েছেন হজে।  বাংলা ভাষায়ও খুতবা প্রচারিত হয় এখন।
এ ধরনের বিশাল ধর্মীয় সমাবেশ পৃথিবীর আর কোনো জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে হয় না। সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে সমর্পণের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধির অন্যতম লক্ষ্য নিয়েই এই ভাবগম্ভীর সমাবেশ। ফলে, এর গুরুত্ব অপরিসীম। সুশৃঙ্খল নিয়মের মধ্য দিয়ে হজ পালিত হয়। ইহরাম বাঁধা, কাবা শরীফ তাওয়াফ করা, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানÑ সবটার মধ্যেই রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলার নির্দেশ। হজ পালনের উদ্দেশ্যে সমবেত বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তা মেনে চলেন। প্রতিবছর হজ পালনের সময় মক্কা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বিশাল আরাফাত ময়দানে লাখ লাখ মুসলমান লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক উচ্চারণ করতে করতে সমবেত হন। মূলত আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই হজের এই মহান সম্মিলন। 
হজের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়, মুসলমানদের পারস্পরিক সমতা এবং বিভেদহীন ঐক্য। আরাফাতের ময়দানে মানুষ সব বৈষম্য ভুলে যায়। বিশ্বের সব মুসলমানের মধ্যে গড়ে ওঠে সাম্য ও সৌভ্রাতৃত্বের পবিত্র বন্ধন। প্রত্যেক মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি, তাঁরই অনুগত দাস এবং হজরত মুহাম্মদের (সা) উম্মত। হজ পালনের সময় ভাষা, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে পরিধান করতে হয় সেলাইবিহীন ইহরাম। পবিত্র ইসলাম সাম্য ও শান্তির বাণী প্রচার করার জন্যই রাসুলুল্লাহ (সা) কর্তৃক প্রতিষ্ঠা ও পূর্ণতা পেয়েছে। বস্তুত সমগ্র মানবজাতিকে শান্তি ও সম্প্রীতির চেতনায় উজ্জীবিত করার প্রকৃত আবেদন এই সুবিশাল মহাসমাবেশের এক পরম শিক্ষা। বিশ্বের সব মুসলমানের মধ্যে ইসলামের মৌলিক সত্যটি উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক, শান্তি ও সাম্যের সুবাতাস প্রবহমান থাকুক, এটিই প্রত্যাশা।

প্যানেল

×