
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।
আর মাত্র এক দিন পর শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা । প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করতে কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরছেন অজস্র মানুষ। রাজধানী ঢাকা থেকে পদ্মা ও যমুনা সেতু এড়িয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলগামী মানুষের বেস ভিড় দেখা গেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয় ও আরিচা ঘাটে। ঘরমুখো মানুষগুলো ঘাট এলাকা থেকে ফেরি-লঞ্চ ও স্পিডবোটে স্বস্তিতে নৌপথ পাড়ি দিয়ে ছুটছেন নিজ-নিজ গন্তব্যে।
বৃহস্পতিবার পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলের বাস-কোচ, মাইক্রো, প্রাইভেটকার চেপে ঘরমুখো মানুষ আসছে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে। মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে কোন বাঁধা না থাকায় স্বাভাবিক গতিতে এ সব যানবাহন ঘাটে আসছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল চেপেও এসেছেন অসংখ্য যাত্রী। ঘাট এলাকায় শৃঙ্খলা ও যাত্রী নিরাপত্তায় দেখা গেছে প্রশাসনের সতর্ক অবস্থান। সহসাই ঘরমুখো যাত্রীরা স্বস্তিতে ছুটছেন নিজ-নিজ গন্তব্যে।
জানাজায়, ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ছোট-বড় ১৭টি ও আরিচা-কাজিরহাট রুটে ৬টি ফেরি অপারেশনে রেখেছে ফেরি কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিসি। উভয় রুটে রয়েছে ৩৩টি লঞ্চ। এছাড়া, দ্রুত যাত্রী পারাপারে আরিচা-কাজিরহাট রুটে চলছে আরও ৬৯টি স্পিডবোট।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী দূরপাল্লার বাস-কোচগুলো সহসাই উঠছে দৌলতদিয়াগামী ফেরিতে। সাথে কাটা লাইনের যাত্রীরা নদী পারি দিচ্ছে তাদের ইচ্ছে মাফিক ফেরি ও লঞ্চে। তবে, এরুটে ফেরি চাইতে লঞ্চে যাত্রী পারের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো।
অপরদিকে, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে মিলেছে কিছুটা ভিন্ন চিত্র। এখানে ফেরি ও লঞ্চের পাশাপাশি যাত্রী পারাপারে চলছে অর্ধশতাধিক স্পিডবোট। স্বল্প সময়ে নদী পারি দিতে আগ্রহী যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা যায় এ যানে।
আরিচা স্পিডবোট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী বিল্লাল হোসেন বলেন, এরুটের ফেরি ও লঞ্চে নদী পারে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা সময় লাগে। আর স্পিডবোটে সময় নেয় মাত্র ২০ মিনিট। এতে ভাড়া একটু বেশি হলেও বাড়তি একটি আনন্দ রয়েছে।
পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটে কথা হয় কুষ্টিয়াগামী যাত্রী মনিরুলের সাথে, তিনি বলেন ভোগান্তির এ নৌপথে স্বস্তিতে ঘরে ফিরছি এটাই বড় কথা। আগে পাটুরিয়া ছিল ভোগান্তির ঘাট। ফেরি ও লঞ্চে উঠা ছিল দায়। হুড়োহুড়ি করে ফেরি-লঞ্চে নদী পারি দিতে বিপাকে পড়তে হয়েছে অনেককে। কিন্তু এখন সে চিত্র আর নেই।
৩নং ফেরি ঘাটে অপেক্ষমাণ যাত্রীবাহী এসবি পরিবহনের চালক আবু সাঈদ বলেন, পাটুরিয়া ফেরি ঘাট পারি দিতে এক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। কষ্টের শেষ ছিল না আমাদের। সে কষ্ট আর নাই। বর্তমানে ঝুট-ঝামেলাও নাই এ ঘাটে।
পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার পান্না লাল নন্দি বলেন, সকাল থেকেই এরুটে যাত্রীচাপ বেড়েছে।ঘাটে দায়িত্বরত প্রশাসনের উপস্থিতি ও নির্দেশনায় সতর্কতার সহিত ২০টি লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
ফেরি সেক্টর বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আব্দুস সালাম বলেন, এবারের ঈদ যাত্রায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ১১টি রোরো, ২টি ইউটিলিটি একটি কেটাইপ ও তিনটি ছোট ফেরি সার্বক্ষণিক অপারেশনে রয়েছে। ঘাটে আসা মাত্রই যানবাহন গুলো সিরিয়ালে ফেরিতে পাড় হচ্ছে। যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রী পারের সংখ্যাও ছিল উল্লেখযোগ্য। সব মিলিয়ে ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতেই এরুটে ঘরে ফিরছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মিরাজ খান