
ছবি:সংগৃহীত
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তাল সময়। রাজধানীর উত্তরা আজমপুরে ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ করছিলেন এক তরুণ—মীর মাহফুজুর রহমান (মুগ্ধ)। তখনও তাঁর মুখে ছিল ডাক, “পানি লাগবে কারও? পানি, পানি!” কিছুক্ষণ পর, সেই এলাকাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল তাঁর নিথর দেহ।
পাশেই পড়ে ছিল পানির বোতলের কেস। যে হাতে পানি বিলিয়ে যাচ্ছিলেন, সে হাতেই ধরা ছিল দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ। কিন্তু সেই মুহূর্তেই একটি গুলি থামিয়ে দেয় তাঁর সমস্ত স্বপ্ন, পরিবার, ভবিষ্যৎ, সব কিছু।
এক বছর কেটে গেছে। আরেকটি কোরবানির ঈদ চলে এসেছে। কিন্তু মীর মুগ্ধের পরিবারে এবারও নেই আনন্দ, নেই ঈদের প্রস্তুতি। কারণ, সেই পরিবারের একজন নেই, চিরতরে।
জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স এবার প্রকাশ করেছে মীর মুগ্ধের শেষ ঈদের কিছু ছবি। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা,
“শেষ ঈদে শহীদ মীর মুগ্ধ”
একটিতে লেখা রয়েছে—
“এই ঈদে গরুর হাটে যাবে না মুগ্ধ। একটি পরিবার ঈদ করবে একজন মানুষ ছাড়া।”
এই শূন্যতা, শুধু একটি পরিবারের নয়, এটা সমগ্র একটি প্রজন্মের, একটি আন্দোলনের, একটি দেশের। এই শূন্যতা পৃথিবীসমান। এই ব্যথা শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটা রাজনৈতিক নির্মমতার এক নির্মম দলিল।
ছাত্র আন্দোলনের সেই দিনগুলো ভুলে যাওয়া কি সম্ভব? যারা এক বোতল পানি হাতে এগিয়ে এসেছিল, তারা কি ক্ষমা করতে পারে এই অন্যায়কে?
“খুনী হাসিনা একটি পরিবারের ঈদ আনন্দ চিরতরে কেড়ে নিয়েছে। আমরা কি ক্ষমা করব? ভুলে যাবো সেই দিনগুলো?”*
ঈদের দিনগুলো, গরুর হাট, বাজার, আনন্দের হইচই, এসব যেন আজ মীর মুগ্ধের পরিবারের জন্য নিষিদ্ধ এক শব্দ। কারণ সেই একটি গুলিই বদলে দিয়েছে সবকিছু।
আঁখি