ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

সৌদি আরব-ইরান সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সমীকরণ

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২৮ মার্চ ২০২৩

সৌদি আরব-ইরান সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সমীকরণ

চীন ও সৌদি আরবের সম্পর্কোন্নয়ন এমন এক সময় ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ইতিহাসে

চীন ও সৌদি আরবের সম্পর্কোন্নয়ন এমন এক সময় ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বৈরী সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের মধ্যেই মাসখানেক আগে তেল উৎপাদন কমানো ও অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের গালে চড় মারা হয়েছে বলে মনে করে মার্কিন প্রশাসন। সৌদি আরব চীন-আরব সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তারা নিজের মতো করে নিতে পারে।

সৌদি আরব চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র তাদের আর নিয়ন্ত্রণ করুক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য রাতারাতি কমে যাবে না। তবে পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চীন ও সৌদি আরবের সম্পর্কের সাম্প্রতিক উষ্ণতা বলছে, পরিবর্তন ঘটতে হয়ত বেশি সময় নেবে না। ঐতিহাসিকভাবেই ইরান-সৌদি সম্পর্কে বৈরিতা রয়েছে। এরই মধ্যে সৌদি আরবে একজন খ্যাতনামা শিয়া ধর্মীয় নেতাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। এর জেরে ২০১৬ সালে রিয়াদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ইরান। তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, এই মৃত্যুদ-ের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এর সাত বছর পরে এসে দুই দেশের সম্পর্ক জোড়া লাগতে সম্মত হয়েছে। আর এতে চীনের বড় ভূমিকা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রও নাকি এটাই চাইত।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, উপসাগরীয় দেশগুলো ইয়েমেন, সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে প্রক্সি যুদ্ধে জড়িয়ে গেছে। এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। চীন সে পথেই এগিয়েছে। এটাকে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। 
তবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে চীনের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। এর মধ্যে একটি সমস্যা হলো দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ইয়েমেন যুদ্ধ। ২০১৪ সালে ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে নেয় ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা।

এর জেরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেন সরকারের কর্মকর্তারা সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। পরের বছর এই সরকারের পক্ষে হুতিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে যুদ্ধে নামে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী। ভয়াবহ এই যুদ্ধে সবচেয়ে দীর্ঘ ছয় মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি গত অক্টোবরে শেষ হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ইয়েমেনে স্থায়ীভাবে শান্তি আনার বিষয়ে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, শিগগিরই সৌদি আরব ও ওমান সফর করবেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত টিম লেনডারকিং। তার লক্ষ্য জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক ওই যুদ্ধবিরতি আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

কিন্তু বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় এমন এক সময় ইরান-সৌদি সমঝোতায় গেল যখন যুদ্ধবিরতি শেষ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। চীন যদি ইয়েমেনের সংঘাত বন্ধে বাড়তি কোনো ভূমিকা রাখতে পারে তা যুক্তরাষ্ট্র ভালো চোখেই দেখবে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য চীন। ইয়েমেন যুদ্ধ, সিরিয়া যুদ্ধ বা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কট নিয়ে এখন পর্যন্ত খুব কম আগ্রহ দেখিয়েছে দেশটি। তবে ইরান-সৌদি সমঝোতার পর চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিন পিং জানিয়েছেন, বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে আরও বড় পরিসরে ভূমিকা রাখবে তার দেশ।

সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘে চীনের উপদূত গেং শুয়াং বলেছেন, ইয়েমেন পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়ে তারাও আশাবাদী। এদিকে সৌদি আরব ও ইরানের জ্বালানি তেলের বড় ক্রেতা চীন। গত ডিসেম্বরে সি জিন পিং সৌদি আরব সফরে গিয়েছিলেন। গত মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বেইজিং গিয়েছিলেন। এর মধ্য দিয়ে চীন আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছে। 
তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হাডসন ইনস্টিটিউটের চায়না সেন্টারের পরিচালক মাইলস ইউয়ের মতে চীন যদি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও সক্রিয় হতে চায় তাহলে বেইজিংয়ের আচরণে বদল আনতে হবে। কারণ, চীনের কূটনৈতিক উদ্যোগগুলো একটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়। সেটি হলো অর্থ। তারা আফ্রিকা ও এশিয়ায় মিত্র বানিয়েছে। এসব মৈত্রীর বেশিরভাগের মূলে রয়েছে অর্থ সংক্রান্ত বিষয়। এই ধরনের সম্পর্ক স্থায়ী মিত্র তৈরি করে না। তবে বর্তমান সময়ে এসে চীন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও মধ্যপ্রাচ্যে আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হতে বেইজিংয়ের সব পদক্ষেপই যে মার্কিনিদের জন্য ক্ষতিকর হবে তা মনে করেন না কানেটিকাটের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস মারফি।

তিনি বলেন, নিজেদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে চীন মধ্যপ্রাচ্যে তৎপরতা বাড়াচ্ছে। সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তাদের কাছে এটা বেশি জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, বিভিন্ন কারণে চীনের দিকে সৌদি আরবের ঝুঁকে পড়ায় অতটাও উদ্বিগ্ন নয় হোয়াইট হাউস। আর যুক্তরাষ্ট্রের সমরাস্ত্রের বড় ক্রেতা সৌদি আরব। এটি নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছে না ওয়াশিংটন। কারণ, মার্কিন সমরাস্ত্র থেকে সরে রুশ কিংবা চীনা সমরাস্ত্রের দিকে যেতে অন্তত এক দশক সময় লাগবে রিয়াদের।

এ বিষয়ে রিয়াদভিত্তিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান রেথিয়ন অ্যারাবিয়ান সিস্টেমস কোম্পানির সাবেক প্রেসিডেন্ট লেজ জাঙ্কা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ সবকিছুর সুবিধা সৌদি আরব পাচ্ছে। সেখান থেকে সরে দাঁড়াতে দেশটির অবিশ্বাস্য পরিমাণ কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে বিশ্বের দুই পরাশক্তির সঙ্গে সাড়া ফেলে দেওয়ার মতো দুটি চুক্তি করেছে সৌদি আরব। পরাশক্তি দুটি হলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। চীনের মধ্যস্থতায় চিরশত্রু ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করতেও রাজি হয়েছে সৌদি আরব। 
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ কিনতে বড় অংকের একটি চুক্তি করেছে দেশটি। এই দুই ঘোষণায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা-জল্পনা তৈরি হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে অর্থনীতি ও ভূরাজনীতিতে প্রভাবশালী হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে রিয়াদ। যেখানে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নেতৃত্বের ভূমিকায় এসেছে চীন।

অনেকে আবার প্রশ্ন তুলেছেন চীনের এই ভূমিকায় সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও থমকে গেল কি-না। এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার মূল্য সৌদি সরকারকে দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত অক্টোবরে আবার শীর্ষ জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়। সৌদি আরব এই জোটের সদস্য।

পশ্চিমাদের আপত্তির মুখে এই ঘোষণা নিয়ে বাইডেন বলেছিলেন, রিয়াদের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার জন্য সুবিধা করে দিয়েছে। তাই সৌদি সরকারকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১২১টি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। এরপর দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের অন্যান্য স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক স্বার্থ বজায় রাখতে চায় ওয়াশিংটন।

এ লক্ষ্যে নানাভাবে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারিত্ব ধরে রাখা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে চীন যখন নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করছে তখন উড়োজাহাজ কেনার এই ঘোষণায় মনে হচ্ছে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। 
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার চালু করতে দুই বছর আগে থেকে আলোচনা চালিয়ে আসছে সৌদি আরব। এ আলোচনা নিয়ে সৌদি কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে সব সময় হালনাগাদ তথ্য দিয়ে এসেছেন। চীন ছাড়াও তেহরান-রিয়াদ আলোচনায় এর আগে মধ্যস্থতা করেছে ইরাক ও ওমান। তবে যুক্তরাষ্ট্র কখনো তাতে অংশ নেয়নি। অন্যদিকে ব্যাপক এ রাজনৈতিক পরিবর্তনের পেছনে চীনের ভূমিকাকে উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।

চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন বিষয়। অন্যদিকে এ ঘটনা চীনের একটি কূটনৈতিক সাফল্য, যা পরাশক্তি হিসেবে দেশটিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কেন চীন এ কৌশল অবলম্বন করল এবং কেনইবা সৌদি আরব ও ইরান চীনের এ মধ্যস্থতা মেনে নিল এটি বর্তমান সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকার অংশ হিসেবে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার এ সম্পর্ক সামনে এসেছে।

অন্যদিকে সৌদি আরব ও ইরান দুই পক্ষেরই বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে তাদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে পারা নিঃসন্দেহে চীনের জন্যও একটি কূটনৈতিক বিজয়। সম্প্রতি বিভিন্ন আঞ্চলিক জোটে পরিবর্তন এসেছে এবং নতুন করে আঞ্চলিক পর্যায়ে পরাশক্তিগুলোর একটি সরব উপস্থিতি আমরা দেখতে পাচ্ছি। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা গেছে।

এর বিপরীতে চীন মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তার অবস্থান আরও সুদৃঢ় করার বিভিন্ন প্রয়াস নিয়ে এগিয়ে চলেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে চীন এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করে চলেছে। এছাড়া এ চুক্তি পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরাইলের পরাজয়ের ইঙ্গিত দেয় বলেও ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলোয় উল্লেখ করা হয়েছে। 
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সৌদি আরবের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়ে থাকে। দেশটির বৈদেশিক নীতি আঞ্চলিক, এমনকি বৈশ্বিক নীতিকেও প্রভাবিত করে থাকে। প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ২০৩০ সালকে টার্গেট করে সৌদি আরবে একটি আমূল পরিবর্তনের রূপরেখা তৈরি করেছেন। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা একটি নিয়ামক, যে কারণে সৌদি সরকার ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাচ্ছে। আবার ইয়েমেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব ইতোমধ্যে একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মুখে আছে।

সৌদি আরব সিরিয়া, মিসরের সঙ্গেও সম্পর্কন্নোয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থা, যা সৌদি অর্থনীতিকে একটি চাপের মধ্যে রেখেছে। তাই বোঝাই যাচ্ছে চীনের মধ্যস্থতার গুরুত্ব। যা হোক, এ পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বে মধ্যপ্রাচ্যের ভূমিকা আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীন একটি নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে যাচ্ছে। চীনের জন্য এ কূটনৈতিক সাফল্য একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে, যা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করতে পারে।

বছরের পর বছর ধরে চলমান মধ্যপ্রাচ্যের এসব সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশগুলোকে যুদ্ধংদেহী বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে সফ্ট পাওয়ার পলিটিক্সে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাতে সব পক্ষেরই ক্ষতির চেয়ে লাভই বেশি। সেজন্য দ্বন্দ্ব নিরসনে রাষ্ট্রগুলোকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ায় যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আশা করা যায় যে, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত মরুতে শান্তি ফিরে আশার সম্ভাবনা এর ফলেই সহজ হবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। 

লেখক : যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও গবেষক

[email protected]

×