ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুজিব’স বাংলাদেশ

-

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২৮ মার্চ ২০২৩

মুজিব’স বাংলাদেশ

সম্পাদকীয়

দেশের ব্র্যান্ড নেম এখন মুজিব’স বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে বিশেষ করে পর্যটকদের কাছে পরিচিত ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যই নির্বাচন করা হয়েছে কান্ট্রি ব্র্যান্ড নেম। কেননা বাংলাদেশ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখন শুধু দেশের নয়, বিশ্ব নেতাও। মুজিব ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তা। একটি থেকে আরেকটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা যায় না।

সে কারণেই এই নামকরণ বা ডোমেইন নেম। এখন থেকে দেশে ও বিদেশে যে বা যারাই বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের প্রচার প্রসার ও বিকাশ ঘটাবেন, তাদের তা করতে হবে মুজিব’স বাংলাদেশ শিরোনামে। এমনটি ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এও স্বীকার করতে হবে যে, পৃথিবীতে ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি’Ñ আর সেই দেশটি হলো বাংলাদেশ। নিসর্গ প্রকৃতিতে ভরপুর নয়নাভিরাম শস্যশ্যামলা সবুজ ও মনোরম বাংলাদেশ। যেখানে বছরে ষড়ঋতু আবর্তিত হয়ে থাকে চক্রাকারে প্রকৃতির অফুরন্ত রূপসম্ভার ও বৈচিত্র্য নিয়ে। 
সম্প্রতি দেশের আকর্ষণীয় স্থানগুলোকে ৫৩টি জোনে বিভক্ত করে ৩২শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে কর্মসংস্থান হবে ৭২ লাখ মানুষের। জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান থাকবে ১০ ভাগ। বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণেও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বাংলাদেশে শীতের প্রারম্ভে শুরু হয় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটনের ভরা মৌসুম। দেশে যে কয়েকটি অন্যতম আকর্ষণীয় এবং অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনসহ তিন পার্বত্য জেলা- রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি।

দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার তো রয়েছেই। উঁচু-নিচু পাহাড়-টিলা, নিবিড় অরণ্যানী, সুবিস্তৃত সমুদ্র সৈকত, অগণিত ঝরনা ও ছড়া সুশোভিত সুসজ্জিত করেছে বাংলাদেশকে। তবে এবারে তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটনের ভরা মৌসুমে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। জঙ্গি হুমকি বা হামলার কালো অপচ্ছায়া। 
সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলা বিশেষ করে বান্দরবানের কিছু দুর্গম অঞ্চলে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের চিরুনি অভিযানে ধরা পড়েছে বেশ কয়েকজন জঙ্গি সন্ত্রাসী তরুণ। জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের নতুন একটি দুর্ধর্ষ প্রকৃতির জঙ্গি সংগঠনের সন্ধানও মিলেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত বম সম্প্রদায়ের কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট  (কেএনএফ)-এর সন্ধানও পাওয়া গেছে। যারা নিজেরাই জঙ্গি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

চিরুনি অভিযানে এ পর্যন্ত কয়েক তরুণকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, যারা মূলত পর্যটকের ছদ্মবেশে ঢুকেছিল পার্বত্য অঞ্চলটিতে। সঙ্গত কারণেই সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তার নিমিত্ত সেখানে বহিরাগতসহ পর্যটকদের প্রবেশে আরোপ করা হয়েছে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা। সুন্দরবনেও রয়েছে একাধিক ডাকাত দলের উপদ্রব। দুর্গম যাতায়াতসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর আবাসন ও আনন্দ-বিনোদনের অভাব। ফলে পর্যটকদের দুর্ভোগের পাশাপাশি ঝুঁকিও রয়েছে। বিপুল লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। সে অবস্থায় দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে সর্বোচ্চ মাত্রায় নিরাপত্তা বিধান বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি দেশীয় ট্যুরিস্ট অপারেটর, পর্যটন কেন্দ্রের মালিক ও কর্মচারীদের যথাযথ সুরক্ষা দেওয়াও আবশ্যক।

×