
ছবি : সংগৃহীত
বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমাতে নতুন পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। দুই দেশের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনার সময়সীমা বাড়ানোর অংশ হিসেবে একে অপরের ওপর আরোপিত কিছু ভারী শুল্ক স্থগিত রাখতে সম্মত হয়েছে তারা।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের আলোচনার পর সোমবার একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে দুই দেশ। সেখানে বলা হয়েছে, আলোচনাগুলো ছিল “ইতিবাচক” এবং এতে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে এই খবরে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। হংকং, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
কি আছে চুক্তিতে?
চুক্তির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৪ শতাংশ শুল্ক স্থগিত রাখবে। ফলে আগে থেকে প্রযোজ্য ১০ শতাংশ শুল্কই বহাল থাকবে। একইভাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত করবে এবং পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকবে।
এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় নেওয়া দুটি নির্বাহী আদেশের আওতায় হংকং ও ম্যাকাও সহ চীন থেকে আমদানি হওয়া বহু পণ্যের ওপর যেসব শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলোও তুলে নেওয়া হবে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উভয় দেশ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে আমরা উন্মুক্ততা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে চাই।”
দুই পক্ষের পক্ষ থেকে নতুন আলোচনাকারী দল ঘোষণা
আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দুই দেশ তাদের প্রতিনিধিদের নাম ঘোষণা করেছে। চীনের পক্ষে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন স্টেট কাউন্সিলের ভাইস প্রিমিয়ার হি লাইফেং। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যত আলোচনা পর্যায়ক্রমে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে অথবা উভয় পক্ষের সম্মতিতে তৃতীয় কোনো দেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রয়োজনে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে টেকনিক্যাল বা কর্ম-স্তরের পরামর্শ সভাও হতে পারে।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের স্কট বেসেন্ট বলেন, “উভয় পক্ষ একে অপরের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল আচরণ করেছে এবং সম্মত হয়েছে যে পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে। উভয় প্রতিনিধিদলের ঐকমত্য হলো যে কোনো পক্ষই আলাদা বা বিচ্ছিন্ন হতে চায় না।”
তিনি আরও বলেন, “শুল্ক আরোপ একধরনের বিচ্ছিন্নতার প্রতীক, যা কেউই আর চাইছে না।”
চীনের সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কয়েকদিন আগেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য কাঠামোতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই চুক্তিতে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর পূর্বের অনেক শুল্ক পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ওয়াশিংটনের বাণিজ্যনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সা/ই