
ছবি: সংগৃহীত
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কোরবানির পশুর প্রস্তুতিও তুঙ্গে। চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় চার শতাধিক বাণিজ্যিক ও ২০ হাজার পারিবারিক খামারি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। গৃহস্থ ও খামার থেকে গরু সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যাপারীরাও।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, এ বছর মীরসরাইয়ে কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা ৫০ হাজার। তবে প্রস্তুত রয়েছে অন্তত ৫৭ হাজার পশু। অর্থাৎ, চাহিদার চেয়ে ৭ হাজার বেশি পশু রয়েছে উপজেলায়। এসব পশুর মধ্যে রয়েছে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ। পশু কেনাবেচার জন্য উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ২ পৌরসভায় ৩১টি স্থায়ী অস্থায়ী বাজার রয়েছে। জানা গেছে, প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত থাকেন। দেশে গত চার বছর ভারত থেকে কোরবানির হাটে পশু কম আমদানি করায় দেশি গরুর চাহিদা ছিল বেশি। খামারিরা ভালো লাভও করেছিলেন। তাই এ বছরও কোরবানিকে সামনে রেখে দেশি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। এ বছরও ভারতীয় গরু না এলে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা। জানা যায়, উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মোট ৩১টি হাটে গবাদি পশু বেচাকেনা হয়। ৩১টি হাটের মধ্যে উপজেলার মীরসরাই বাজার, বড়তাকিয়া, মিঠাছড়া, জোরারগঞ্জ, বারইয়ারহাট, আবুতোরাব গরুর বাজারগুলো বড়। এসব বাজারে বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারিরা এসে গরু কিনে ফেনী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন। এছাড়া স্থানীয় বেপারিরা এলাকার খামার ও কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু কিনে তা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন।
বর্তমানে উপজেলার প্রায় ২১ হাজার মানুষ (খামারি, কৃষক ও বেপারিরা) এ পেশায় রয়েছেন। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য বাড়িতে একটি দুইটি করে গরু মোটাতাজা করেন। ঈদের সময় আকার ভেদে গত বছর প্রতিটি গরু ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন এখানকার গবাদিপশুর খামারি ও কৃষকরা। জোরারগঞ্জের প্রান্তিক খামারী মো. মহিউদ্দিন জানান, গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির গরুর দাম ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে। গত বছরের তুলনায় চালের কুড়া, খড়, ধানের গুঁড়া, ছোট ঘাস ও গমের খোসার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। প্রতিবেশী দেশ থেকে পশু না এলে স্থানীয় খামারিরা ভালো দাম পাবেন। স্বাভাবিক খাবার দিয়েই পশু মোটা তাজা করেছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলার চিনকি আস্তানা এলাকার ওহাব এগ্রোর ম্যানেজার মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের খামারে ১২০টি গরু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে শাহীওয়াল, হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান, দেশাল, পাকরাসহ বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এসব গরুর মূল্য ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।’ মীরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ জানান, এ বছর উপজেলায় কোরবানির জন্য ৩০ হাজার গরু, ৩ হাজার মহিষ, ১৭ হাজার ছাগল ও ৭ হাজার ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে। উদ্বৃত্ত পশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
আসিফ