
ছবি: জনকণ্ঠ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মানুষের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি এ অঞ্চলের নারীরা হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
উপজেলার স্বসান বাজার এলাকার একটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, প্লাস্টিকের কুচি তৈরির কাজে নারী-পুরুষ একসঙ্গে কাজ করছেন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল, ভাঙা প্লাস্টিক বর্জ্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে কারখানার এক পাশে। অন্যদিকে প্লাস্টিক কুচি শুকাতে ব্যস্ত নারী শ্রমিকরা। মানুষের ব্যবহৃত এই প্লাস্টিকের আবর্জনা সংগ্রহ করে কুচি তৈরির নানা ধাপে শ্রমিকরা কাজ করছেন। কেউ বোতল, কেউ স্যালাইনের ব্যাগ, আবার কেউ সিরিঞ্জ বা বোতলের ছিপি আলাদা করে রাখছেন।
এসব কারখানায় প্লাস্টিকের পুরোনো বোতল, স্যালাইনের কভার, সিরিঞ্জসহ বিভিন্ন পণ্য মেশিনে ভেঙে তৈরি করা হয় প্লাস্টিক কুচি। কারখানায় কাজ করা শ্রমিক ববিতা রানী বলেন, “আগে মানুষের জমিতে সারাদিন কৃষিকাজ করতাম। এখন এখানে ৮ ঘণ্টা কাজ করে ৪০০ টাকা মজুরি পাই। আমি বোতলের স্টিকার খোলার কাজ করি। বসে বসে কাজ করি, কোনো সমস্যা হয় না।”
আরেক শ্রমিক আলামিন ইসলাম বলেন, “আগে অভাবের সংসারে ঢাকায় গিয়ে বিল্ডিংয়ের কাজ করতাম। পরে এক দুর্ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর এখানে এসে কাজ শুরু করি। প্লাস্টিকের পণ্যগুলো ভাগ করে নিয়ে মেশিনে কুচি বানানো হয়। এরপর ওয়াশ মেশিনে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়।”
কারখানার মালিক আহসান হাবীব জানান, “শ্রমিকরা প্লাস্টিক পণ্য আলাদা করে মেশিনে কুচি তৈরি করে। এরপর ওয়াশ মেশিনে পরিষ্কার করে শুকিয়ে প্যাকেটজাত করা হয়। এসব কুচি ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী কিনে নেন। তারা এগুলো দিয়ে নতুন প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করেন, অনেকে বিদেশেও রপ্তানি করেন।”
এ বিষয়ে নীলফামারী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মণ বলেন, “ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ কর্মসংস্থান পাচ্ছেন। এটা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক উদ্যোগ।”
শহীদ