ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

আমতলীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে মাছের ঘের নির্মাণের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ১৮:৪৭, ১০ মে ২০২৫

আমতলীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে মাছের ঘের নির্মাণের অভিযোগ

ছবিঃ প্রতিবেদক

পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী নাশির আকন ঘের নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা এমন অভিযোগ করেছেন। স্থানীয়রা এ বিষয়ে তালতলী উপজলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু নাশির আকন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশ অমান্য করে রাতের আধারে ঘের কেটে ফেলেছেন। এ ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া শুভ সন্ধ্যা সুমদ্র সৈকত এলাকায়।

জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনার সোলাইমান সিকদার ও নলবুনিয়ার শাহজাহান শেখের কাছ থেকে ৬ একর জমি অধিগ্রহন করে নেয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের পরে ওই জমির অন্তত ৪ একর জমি থেকে যায়। এ দিকে সোলাইমান সিকদারের অবশিষ্ট ২০ একর জমি স্থানীয় নাশির আকন মাছের ঘের করতে তার ছেলে হাসিফ সিকদারের কাছ থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে নেন।

চুক্তি অনুসারে গত মঙ্গলবার ওই জমিতে ঘের কাটা শুরু করেন নাশির আকন। শুরুতেই তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি ঘেরে মধ্যে রেখে নির্মাণ কাজ করনে। স্থানীয়রা এতে বাধা দেয়। পরে তিনি স্থানীয়দের হুমকি দেন এমন অীভযোগ তাদের। পরে স্থানীয়রা তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখলের কথা জানায়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা ঘের নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু ইউএনও নির্দেশ অমান্য করে প্রভাবশালী নাশির আকন রাতের আধারে ঘের কেটে ফেলেন। অভিযোগ রয়েছে এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে নাশির আকন এতে বাধা দিয়েছেন। এমনকি ছবিও তুলতে দেয়নি তিনি। 

নাম প্রকাশে অচ্ছিুক কয়েকজন বলেন, প্রভাবশালী নাশির আকন রাতের আধারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে ঘের নির্মাণ করছেন। আমরা এতে বাঁধা দিলে আমাদের হুমকি দিয়েছেন।

স্থানীয় শাহজাহান শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ আমার ও সোলায়মান সিকদারের কাছ থেকে ৬ একর জমি অধিগ্রহন করেছেন।’ সোলাইমান সিকদারের রেকর্ডীয় জমির সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে নাশির আকন ঘের নির্মাণ করছেন। তিনি আরো বলেন, ‘স্থানীয়রা এতে বাঁধা দিয়েছিল কিন্তু নাশির তা মানেনি।’

রেকর্ডীয় জমির মালিক সোলাইমান সিকদারের ছেলে হানিফ সিকদার বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড আমার বাবার কাছ থেকে ৩ একর ৭২ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করেছে। ওই জমি ছাড়াও আমার ওই স্থানে ২০ একর জমি রয়েছে। ওই জমি আমি নাশির আকনের কাছে পাঁচ বছর চুক্তিতে মাছের ঘের নির্মাণ করতে দিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহন করা জমির পাশে আমার জমি। তাই ৫-৭ ফুট পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি ঘেরের মধ্যে থাকতেও পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আগামী সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে কাগজপত্র নিয়ে থাকতে বলেছেন। কাগজপত্র দেখে তিনি সিধান্ত নিবেন।’

এ বিষয়ে নাশির আকন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে ঘের নির্মাণের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সোলাইমান সিকদারের জমি তার ছেলে হানিফ সিকদারের কাছ থেকে মাছের ঘের করবো বলে পাঁচ বছর চুক্তিতে নিয়েছি। ওই জমিতেই আমি ঘের নির্মাণ কাজ করছি। তবে কেন রাতের আধারে নির্মাণ কাজ করছেন এবং সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তিনি।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিমেল মিয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, ‘ওই জমিতে ঘের নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া এবং জমির মালিককে আগামী সোমবার কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরশি

আরো পড়ুন  

×