ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মূল্য নিয়ন্ত্রণে সাত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমন্বয় টিম গঠন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

বেপরোয়া বাজার সিন্ডিকেট ১৭ পণ্যের দাম বাড়তি

এম শাহজাহান

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪

বেপরোয়া বাজার সিন্ডিকেট ১৭ পণ্যের দাম বাড়তি

বেপরোয়া বাজার সিন্ডিকেট

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের লড়াই শেষ হতেই ফের বেপরোয়া উঠছে অসাধু ব্যবসায়ীদের ‘বাজার সিন্ডিকেট’। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, আটা, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, গরুর মাংস ও পেঁয়াজসহ অত্যাবশ্যকীয় ১৭ পণ্যের দাম বেড়েছে। জানুয়ারির শুরু থেকে প্রশাসনের নি¤œ থেকে উচ্চস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়েছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই বেশকিছু পণ্যের মজুত বাড়িয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে।

এ ছাড়া পণ্য পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনের পর সারাদেশে সড়ক পরিবহনে পথে পথে চাঁদাবাজির তা-বে পণ্য পরিবহনে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। নতুন চাঁদাবাজি গ্রুপের কারণে বেড়েছে পরিবহন খরচ। এ কারণে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। তবে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সাত মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ নেওয়ার পরের দিন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন।  
জানা গেছে, দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল ও আটার দাম বৃদ্ধি বাজারের অস্থিরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি চালে ২-৭ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বর্তমান বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৭৮ টাকায়। একইভাবে বেড়েছে আটার দাম। মানভেদে প্রতিকেজি আটা ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল ও আটার দাম আরও বাড়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চালের হঠাৎ এ দরবৃদ্ধিতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দায়ী করেছেন। অন্যদিকে মিল মালিকরা বলছেন, অবৈধ মজুতদারির কথা।

অন্যদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মঙ্গলবার থেকে বাজারে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। আজ বুধবার খাদ্য অধিদপ্তরে সারাদেশের চালের মিল মালিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করবেন খাদ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, খুচরা বাজারে চাল ও আটার দাম বাড়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে আসায় ইতোমধ্যে বাজারে অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মিলমালিকদের সঙ্গে বসবো।

এ মুহূর্তে চাল ও আটার দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তিনি বলেন, যারা কারসাজি করে চাল ও আটার মতো ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াবে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিভাগীয় কমিশনারদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া হবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর পাশাপাশি মোকামেও চালের দাম বাড়তি। কয়েক দিনের ব্যবধানে দেশের চালের অন্যতম বড় মোকাম দিনাজপুরে বস্তাপ্রতি (৭৫ কেজি) ধানের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ’ টাকা। আর ধানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চালের দাম। জানা গেছে, টানা চতুর্থবার ভোটে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিএনপি-জামায়াতপন্থি ব্যবসায়ীরা বাজারে সক্রিয় রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের আগে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেশে হৈ-চৈ ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের নানা উদ্যোগে সেই সময় দুদিনের মধ্যে আবার স্বাভাবিক হয় পেঁয়াজের বাজার। এর আগে আলু, চিনি, ভোজ্যতেল ও লবণ নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে। এবার ভোটের পর অত্যাবশ্যকীয় ১৭টি পণ্যেরই কম বেশি দাম বেড়েছে। এছাড়া রমজান মাস সামনে রেখে অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের তৎপরতা রয়েছে বাজারে। অসাধু ব্যবসায়ীদের এই বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের সাধারণ মানুষ।

যদিও দায়িত্ব গ্রহণের পরেই বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, তার প্রথম ও প্রধান কাজ বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রেখে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। এ ছাড়া যারা পণ্য মজুত করে ভোক্তাদের কষ্ট দেয় তাদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণাও দেন তিনি। কিন্তু বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি আমলে নেয়নি অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। 
পণ্যমূল্য কমাতে যেসব উদ্যোগ নেবে সরকার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্য কমানোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে নতুন সরকার। এলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলটির নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী দ্রব্যমূল্য দেশের সকল মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

এগুলো হচ্ছে- বাজার মূল্য ও আয়ের মধ্যে সংগতি প্রতিষ্ঠা করা, যেসব পণ্যের বাজার দেশীয় উৎপাদন ও সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভর করছে, সেগুলোর ন্যায্যমূল্য প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর সর্বোচ্চ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা, পণ্যমূল্য কমাতে উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তির লভ্যতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা উৎসাহিত করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, মুদ্রা সরবরাহ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায়-উপকরণ হিসেবে নীতি সুদহার ব্যবহার করা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি অর্থাৎ নতুন পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে শুল্ককর রেয়াত ও প্রণোদনা পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারি এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে।
এ ছাড়া রমজান মাস সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য কমানো এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি  অগ্রাধিকার দিচ্ছে নতুন সরকার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন বছরে নতুন সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার মতো পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করতে হবে। এবারের রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম যাতে স্বাভাবিক  ও ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে থাকে সেই উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, নতুন বছরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলারের বিনিময় হার এবং রপ্তানি-প্রবাসী আয় বাড়ানোর মতো তিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে সরকারের সামনে। তার মতে, প্রয়োজনে মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সমন্বয়ের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এছাড়া আমদানি শুল্ক হ্রাস করে পণ্য আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি দিতে নতুন বছরে মূল্যস্ফীতি ৪-৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের বেশি হওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মূল্যস্ফীতি কমাতে কঠোর মুদ্রানীতি একমাত্র সঠিক উদ্যোগ নয়, এর সঙ্গে অন্যান্য উদ্যোগও প্রয়োজন। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়ছে, এতে মূল্যস্ফীতি বেশি হচ্ছে। তাই বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুতে সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে।

সাত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমন্বয় টিম করার উদ্যোগ ॥ বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে অন্তত সাতটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি সমন্বয় টিম গঠনের আগ্রহ দেখিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। এ প্রসঙ্গে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এককভাবে কোনো মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণে অন্তত সাতটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমন্বয় টিম গঠন করে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করবে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে লিড মিনিস্ট্রি ধরে খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই টিম গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এর বাইরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য পূর্বাভাস সেল, বাজার মনিটরিং টিম, টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো এবং এ সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির মতামত গ্রহণ করবে সরকার। 
কোন্ পণ্যের দাম কতটুকু বাড়ল ॥ গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর অত্যাবশ্যকীয় বেশির ভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নিউমার্কেট, ফকিরাপুল ও কাপ্তান বাজার এলাকায় খোঁজ নিয়ে  দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চাল ইরি-স্বর্ণা কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেড়ে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মাঝারিমানের চাল পাইজাম-লতা কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা ও সরু চাল নাজিরশাইল-মিনিকেট কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে ৬৬ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে সয়াবিন, আটা ও চিনি, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংস। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর কাজ ঘোষণা দিয়ে করলেও এবারে চুপিসারেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো।

একইসঙ্গে প্রতিকেজি আটায় ৫ টাকা এবং ও চিনির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়, যা নির্বাচনের আগ বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
টিসিবি ১৬ জানুয়ারির বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি আটার দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিকেজি আটার প্যাকেট ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৪৮ টাকা মূল্যের চিনির প্যাকেট কেটে ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে থেকে প্রভাব পড়তে শুরু করলেও গরুর মাংসের দাম নির্বাচনের পরই মূলত ঢাকায় ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০-২১০ টাকা হয়েছে। ডিমের দামও এ সময়ে প্রতি ডজন ১২৫-১৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৩৫ টাকায় উঠেছে।

এছাড়া নির্বাচনের আগে পেঁয়াজের দাম কমে এলেও এখন আবার কিছুটা বাড়তি। ওই সময় মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সেই তুলনায় কিছুটা কমেছে আলুর দাম। কেজিতে ৫ টাকা কমে প্রতিকেজি নতুন আলু ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি মসুর ডাল নির্বাচনের আগে মানভেদে ১১০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ১১৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ছোলায় ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা। এ ছাড়া আদা, রসুন ও অন্যান্য মসলাপাতিও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। 
লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল সীমিত হওয়ার প্রভাব ॥ ইয়েমেনের হুতিদের আক্রমণের কারণে লোহিত সাগর পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে, সীমিত হয়ে পড়েছে চলাচল। জাহাজ চলাচল বিঘিœত হওয়ায় আমদানি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের সেলস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগের প্রধান মো. রেদওয়ানুর রহমান বলেন, লোহিত সাগরের জটিলতার কারণে আমাদের ওপর যে ধাক্কাটা আসবে, সেটা হয়তো আরও মাসখানেক সময় লাগবে, কারণ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্টক রয়েছে আমাদের হাতে।

ইতোমধ্যেই ফ্রেইট চার্জ ১০-১৫ শতাংশ  বেড়েছে, কিন্তু এর চেয়েও বড় সমস্যা হচ্ছে জাহাজের সিডিউল পাওয়া যাচ্ছে না। যার প্রভাবটা গমের ওপরই সবচেয়ে বেশি পড়বে। এর পাশাপাশি এলসি খোলা এবং ডলার সংকটের বিষয়টি রয়েছে। এদিকে আগামী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি।

মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেন, রমজান সামনে রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এটি ধর্মীয় বা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। নিত্যপণ্যের দাম কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

×