ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

দুর্যোগ সম্পর্কিত গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান

প্রকাশিত: ১৮:২২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দুর্যোগ সম্পর্কিত গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান  বলেছেন, দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে প্রাণহানি বা সহনীয় কিংবা প্রতিরোধ বা ক্ষতি প্রশমিত করা সম্ভব। এই কাজ সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অংশিজনের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি, দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবহাওয়া সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। যা একদমই কাম্য নয়। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে, তাহলে গণমাধ্যমকে সত্যিটা তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি। 

রবিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর মহাখালীস্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘দুর্যোগ ঝুঁঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণে কর্মকাঠামো এবং প্রাইভেট সেক্টর ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মপরিধি’ শীর্ষক কর্মশালায় একথা বলেন তিনি।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, যে কোনো অগ্নিকান্ডের ঘটনায় যদি প্রথম সাড়া দেন তাহলে আগুনে ক্ষতি কম হয় বা প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছে দাবি করে ডিজি বলেন, অগ্নিকান্ড, বন্যা, ভূমি ধস বা ভূমিকম্পের মতো যে কোনো দুর্যোগে সরকারের পক্ষ থেকে হয়তো রিলিভ দিচ্ছি কিন্তু ক্ষতিটা সবার, ব্যবসায়ীর তো বটেই। সেজন্য ক্ষতিগ্রস্তদের চোখে যদি জল আসে, সচেতন হয়, তবেই স্বার্থকতা।

মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, তবে প্রাণহানি বা সহনীয় কিংবা প্রতিরোধ বা ক্ষতি প্রশমিত করা সম্ভব। প্রতিবছর বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস আসবে, এটা অনুমিত। দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে প্রকৃতি কিন্তু অনেক বদলেছে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়ন কাজ চলছে। দুর্যোগে উন্নয়ন কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলে সমালোচনা বা থেমে থাকলে হবে না। আর সব সরকার করে দেবে না। ব্যবসায় লাভবান হবেন, কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখবেন না, তা হবে না। নিজে সচেতন হই, শিখি, নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে শেখাই। দুর্যোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয় করে ঘরে রাখি।

আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে ও সরকারের সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জন করেছে। কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একটু সচেতন হলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নগদ টাকা, ভাউচার রেখে গেছেন। সব পুড়ে ছাই হয়েছে। কোটিপতি ব্যবসায়ী আজ ফকির হয়েছেন। অথচ একটু সচেতনতাই আমাদের নিরাপদ করতে পারতো। দুর্যোগে সচেতনতায় ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা প্রাইভেট সেক্টরকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবার আগে অল্প খরচ আর সচেতনতায় সম্ভব যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করা। অস্ত্র থাকলেই তো হবে না, প্রশিক্ষণ লাগবে। ফায়ার এলার্ম চালানো, পানির রিজার্ভ বাড়ানো ও হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা ও চালানো, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানও অর্জন করতে হবে। আমাদের অনেক বড় ভবনে এমার্জেন্সি সিঁড়ি নাই। ভবনে ফায়ার স্ট্রিংগুইশার রাখা, নিয়মিত বৈদ্যুতিক লাইন চেক করা। ভেজা কাপড় দিয়েই প্রাথমিকভাবে ফাইট করা যায়। কমন কিছু জ্ঞান প্রয়োগেই আগুন প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন প্রতিরোধ করতে পারি। সতর্কতা জরুরি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভিত্তিক মডেলটি ইনস্টল এবং ব্যবহার করতে তাদের উৎসাহ দিচ্ছি। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আগুন বা ধোঁয়া সনাক্ত করে তাৎক্ষনিক ম্যাসেজ দেয়ার প্রজেক্ট নিয়েছি। দুবছর ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। এটা আমরা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কাজ করার প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছি।  

অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএম) নিতাই চন্দ্র দে সরকার, ১০৯০ কে আমরা প্রমোট করছি। আগে টোল ছিল। সেটা ফ্রি করা হয়েছে। যে কেউ এখন খুব সহজেই এই নাম্বার ডায়াল করে দুর্যোগ ও আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, স্ট্রেন্দেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্পটি একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। 
 

 

ফজলু

×