ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জমির খোঁজ না রাখলে হারাতে পারেন মালিকানা-জেনে নিন কী করণীয়

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:৫১, ১১ জুন ২০২৫

জমির খোঁজ না রাখলে হারাতে পারেন মালিকানা-জেনে নিন কী করণীয়

ছবিঃ সংগৃহীত

দীর্ঘদিন নিজের জমির খোঁজ না রাখলে, সেই জমি অবৈধভাবে দখল হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয় এবং প্রতারক চক্র এই সুযোগে জাল দলিল তৈরি করে জমি নিজেদের নামে রেকর্ড করাতে সক্ষম হয়। এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে, বিশেষ করে যারা প্রবাসে থাকেন বা দীর্ঘদিন জমির খোঁজখবর রাখেন না, তারা বেশি বিপদের মুখে পড়েন।

একজন ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, “অনেক বছর পর জমিতে গিয়ে দেখি, অন্য কেউ দাবি করছে জমির মালিকানা। তারা দলিলও দেখাচ্ছে। পরে বুঝি দলিলটি জাল।”

কী করবেন এমন পরিস্থিতিতে?

প্রথমেই দলিল যাচাই করতে হবে। যদি দেখেন কেউ জাল দলিল দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করছে, তাহলে সেই দলিলকে আইনের চোখে বৈধ দলিল হিসেবে গণ্য করা যায় না। আপনাকে অবশ্যই সেটিকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।

যে ব্যক্তি দলিল দেখাচ্ছে, তার কাছ থেকে যেকোনো উপায়ে সেই দলিলের একটি ফটোকপি সংগ্রহ করতে হবে। অনেক সময় প্রতারকরা ইচ্ছা করেই দলিল দিতে চায় না। তারা “পরে দেব”, “আছে কিন্তু এখন আনিনি” ইত্যাদি অজুহাত দিয়ে সময় ক্ষেপণের চেষ্টা করে। কারণ, প্রাথমিকভাবে দলিল হাতে নিলেই বুঝা যায় সেটি জাল কি না।

দলিল যাচাই

ফটোকপি পাওয়ার পর সেটি নিয়ে যান সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে বা জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে এবং যাচাই করুন দলিলটি আসল কি না। যদি দেখা যায় সব তথ্য মিলে যাচ্ছে, তাহলে পুরনো পারিবারিক কাগজপত্র চেক করুন—বিশেষ করে আপনার বাবা বা পূর্বপুরুষরা যদি ওই জমি বিক্রি করে থাকেন, তার কোনো রেকর্ড আছে কি না। স্বাক্ষর, তারিখ, ওয়াকিলনামা—সবকিছু মিলিয়ে যাচাই করুন।

যদি নিশ্চিত হন যে দলিলটি জাল এবং আপনার জমি প্রতারণার মাধ্যমে অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে, তাহলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

আইনি পদক্ষেপ

এই ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এর ধারা ৫ ও ৬ অনুযায়ী মামলা করা যায়। এই আইনে ৭ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। পাশাপাশি আপনি ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালতে পৃথক মামলা করতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

  • জমির কাগজপত্র যতটা সম্ভব নিরাপদে রাখুন।

  • প্রতি বছর অন্তত একবার জমির খতিয়ান ও রেকর্ড চেক করুন।

  • জমির চারপাশে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, যেন কিছু ঘটলে আপনাকে জানাতে পারে।

  • জমি দেখভালের জন্য নির্ভরযোগ্য একজন লোক রাখুন।

উপসংহার:
জমির খোঁজ না রাখা মানে নিজের সম্পদ বিপদে ফেলা। প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে সময়মতো খোঁজখবর ও আইনি প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

পৃথী

আরো পড়ুন  

×