ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় কিডনি রোগ: কী বলছে গবেষণা? 

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ১৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৭:৩৭, ১৮ জুন ২০২৫

হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় কিডনি রোগ: কী বলছে গবেষণা? 

ছবিঃ সংগৃহীত

হৃদয় ও কিডনি—দুইটি অঙ্গই আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদের কার্যক্ষমতা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক চিকিৎসা গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কিডনি রোগ হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কিডনি ফেল করার আগেই হৃদযন্ত্রের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করার আশঙ্কায় বেশি থাকেন।

হৃদয় ও কিডনি একসঙ্গে কাজ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, তরল ভারসাম্য রক্ষা এবং শরীর থেকে বর্জ্য নিষ্কাশন করে। হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করে কিডনিতে পাঠায়, যাতে কিডনি বর্জ্য ছেঁকে বের করতে পারে। অন্যদিকে, কিডনি রক্তচাপ ও ইলেকট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদযন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। তবে এই সংবেদনশীল ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটলে দুই অঙ্গেই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) আক্রান্তদের মধ্যে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, CKD আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর প্রধান কারণ কিডনি ফেল নয়, বরং হৃদরোগ। এমনকি কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হওয়ার আগেই হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

হৃদরোগ ও কিডনি রোগকে “নীরব ঘাতক” বলা হয়, কারণ এগুলোর উপসর্গ অনেক সময় দেরিতে প্রকাশ পায়। যেসব ব্যক্তির ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা পূর্বে হৃদয় বা কিডনি সমস্যার ইতিহাস রয়েছে, তাদের বিশেষ সাবধান থাকা জরুরি। ক্লান্তি, পা ফোলা, প্রস্রাবের পরিমাণে পরিবর্তন বা শ্বাসকষ্ট হলে তা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বিশেষজ্ঞরা কিডনি ও হৃদরোগ প্রতিরোধে নিচের বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে বলছেন—

রক্তচাপ ও রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখা

কম লবণ ও কম চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

নিয়মিত ব্যায়াম

পর্যাপ্ত পানি পান করা ও ধূমপান থেকে বিরত থাকা

নিয়মিত কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা

প্রয়োজনে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য রক্ষার মূল চাবিকাঠি হলো জীবনধারা পরিবর্তন। হৃদয় ও কিডনির পারস্পরিক সম্পর্ক উপলব্ধি করা রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। একে অপরের ওপর নির্ভরশীল এই অঙ্গদ্বয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক সতর্কতা ও প্রতিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। এ কারণেই পুরো শরীরকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচনা করেই চিকিৎসা পরিকল্পনা করা উচিত।

সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া 

নোভা

×