
রাস্তা থেকে তুলে ঘরে ফিরলেন ৯০ বছরের বিমলা রানী। মা, শব্দটা যতটা পবিত্র, বাস্তব জীবনে অনেক সময় ততটাই নির্মম হয় সেই মায়ের পরিণতি। ৯০ বছরের বৃদ্ধা বিমলা রানী, যিনি একসময় নিজের সন্তানদের কোলে পিঠে মানুষ করেছিলেন, আজ তাকেই সন্তানরা ঠাঁই দিলো না নিজেদের ঘরে। চিরচেনা সংসার, প্রিয় মুখগুলোর থেকে আজ তিনি যেন এক অবাঞ্ছিত নামমাত্র সম্পর্ক।
বগুড়ার বড়কুমিড়া হিন্দুপাড়ায় দেখা মেলে এমনই এক করুণ দৃশ্যের,চোখে ঝাপসা দৃষ্টি, কানে কম শোনা, হাঁটতেও পারেন না ঠিকমতো,তবুও রাস্তায় পড়ে ছিলেন বৃদ্ধা বিমলা রানী। অভিযোগ, নিজের তিন ছেলের কেউই আজ তাকে ঘরে রাখতে চান না।
স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া সদর সেনা ক্যাম্পের একটি মানবিক টহলদল নেতৃত্ব দেন লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ। তারা রাস্তা থেকে বিমলা রানীকে তুলে তারই এক ছেলের বাড়িতে পৌঁছে দেন। শুধু তাই নয়, লেফটেন্যান্ট ফাহাদ নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দেন এই অসহায় মাকে।
তিনি বলেন, “একটি মায়ের এতো কষ্ট দেখেও যদি সন্তান চোখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে আমাদেরও কিছু দায় থেকে যায়। আমরা শুধু সেনা নই, আমরা এই দেশেরই সন্তান।” সেনাবাহিনীর এমন মানবিক হস্তক্ষেপে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এলাকার মানুষ। তারা জানান, বিমলা রানীর ছেলেরা শুধু দায়িত্ব থেকে পলায়নই করেননি, বরং বছরের পর বছর মাকে অবহেলায় রেখেছেন।
লেফটেন্যান্ট ফাহাদ আরও জানান, “অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছেলেরা ভুল স্বীকার করেছে। প্রয়োজনে তাদের আর্থিক সহায়তাও করবে সেনাবাহিনী।” এখনও সমাজে কিছু মানুষ আছে, যারা মায়েদের জন্য বুক পেতে দাঁড়ায়,সেই উদাহরণই তৈরি করল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আঁখি