
ছবি:সংগৃহীত
অলিভ অয়েল, রসুন, অ্যাভোকাডো, আখরোট, গ্রিন টি এবং বেরি হলো সেই খাবারগুলোর মধ্যে, যা উচ্চ লিভার এনজাইমযুক্ত ব্যক্তিদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
খাদ্যাভ্যাস লিভার এনজাইমের মাত্রাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। নুট্রিহোম নিউট্রিশন ক্লিনিক সিস্টেমের ড. নগুয়েন আন্হ দুয়তুনগের মতে, অনেক রোগী উচ্চ লিভার এনজাইমের সমস্যা নিয়ে খাদ্য পরামর্শ নিতে আসেন। সাধারণভাবে, কার্বোহাইড্রেট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খাওয়া অনেকের ক্ষেত্রে এনজাইম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হয়েছে।
নিচে উচ্চ লিভার এনজাইম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ১১টি খাবার দেওয়া হলো:
১. রসুন
রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যালিসিন AST এবং ALT লিভার এনজাইম ও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। রসুন প্রদাহ বিরোধী কার্য সম্পাদন করে, লিভারকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং চর্বিযুক্ত লিভার ও উচ্চ রক্তচর্বি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
২. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটে (বিশেষ করে ওলেইক অ্যাসিড) সমৃদ্ধ, যা রক্তে চর্বির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে এবং এর ফলে লিভার এনজাইমও কমে। এতে থাকা ভিটামিন ই ও পলিফেনল লিভারকে ফ্রি র্যাডিকেল ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং সামগ্রিক লিভার ফাংশন উন্নত করে।
৩. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারে চর্বি জমা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং GGT এনজাইমের মাত্রা কমাতে পারে।
ওমেগা-৩ পেতে অ্যাভোকাডো, স্যামন, হারিং, টুনা, ম্যাকেরেল, ভেজিটেবল অয়েল, মার্জারিন, ডাল ও বীজজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
৪. বেরি
স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি ও ক্র্যানবেরির মতো বেরিগুলো উচ্চ লিভার এনজাইমযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রাকৃতিক “সুপারফুড”। এতে থাকা ফাইবার চর্বি শোষণ কমায় এবং এনজাইম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এতে থাকা ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিন লিভারকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে ও পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
৫. আখরোট
ফ্যাটি লিভার ডিজিজই লিভার এনজাইম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আখরোটে থাকা ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ও পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্যাটি লিভার কমাতে সহায়তা করে।
৬. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে থাকা মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের কোলেস্টেরল কমায় এবং প্রদাহজনিত লিভার ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
এতে থাকা ভিটামিন ই, সি ও পলিফেনল লিভার টিস্যুর পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে এবং লিভার এনজাইম নিয়ন্ত্রণে আনে।
৭. গ্রিন টি (সবুজ চা)
গ্রিন টি-তে থাকা পলিফেনল ও ক্যাটেচিনস লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও রক্তে চিনির মাত্রা কমায়, যা ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস ও লিভার ক্ষতির বিরুদ্ধে রক্ষা করে।
৮. কফি
কফি AST, ALT, ALP ও GGT এনজাইমের মাত্রা কমাতে সহায়ক। তবে এতে পরিশোধিত চিনি না দিয়ে ক্যালোরি-ফ্রি মিষ্টিকারক ব্যবহার করাই উত্তম।
৯. পাতা-ওয়ালা সবজি
পাতাযুক্ত সবজিতে ফোলেট (ভিটামিন B9) থাকে, যা কমে গেলে ALT ও GGT বেড়ে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। ফোলেট পাওয়া যায় গাঢ় সবুজ শাকসবজি, বাদাম, ডাল, ফলমূল, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য যেমন দই ও পনিরে।
১০. ক্রুসিফেরাস সবজি
এই সবজিতে গ্লুকোসিনোলেট নামক যৌগ থাকে, যা হজমের পর গ্লুটাথিয়ন এস-ট্রান্সফারেজ (GST) এনজাইম তৈরি বাড়িয়ে লিভার টিস্যুর ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
১১. বীজ ও বাদাম
বিভিন্ন বীজে থাকা এলাজিক অ্যাসিড লিভারকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে ও ফ্যাটি লিভার এবং উচ্চ এনজাইম প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন ই AST ও ALT কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি সিলিবাম ম্যারিয়ানাম (মিল্ক থিসল) ও ওয়াসাবিয়া জাপোনিকা জাতীয় প্রাকৃতিক নির্যাস লিভারের ডিটক্সিফিকেশন ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
মারিয়া