প্রতিদিন গাজর ও আদার রস খেলে আপনার শরীরে যা হয়

সকালের এক গ্লাস স্বাস্থ্যকর পানীয় শরীরকে সতেজ করে তোলে, সেইসঙ্গে পুষ্টিগুণেও ভরপুর। তেমনই একটি সহজ কিন্তু কার্যকর পানীয় হল গাজর ও আদার রস। গাজর এবং আদা—এই দুই উপাদানই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং একত্রে শরীরের জন্য নানানভাবে উপকার করে। নিয়মিত এই রস খাওয়ার ফলে কী কী উপকার মিলতে পারে, চলুন একবার দেখে নেওয়া যাক।

কিভাবে বানাবেন গাজর ও আদার রস?
২-৪টি গাজর এবং প্রায় ১ ইঞ্চি আদা ভালভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে কেটে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে ১ কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। একটি সূক্ষ্ম ছাঁকনি দিয়ে রস ছেঁকে নিন। চাইলে আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করুন।

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গাজরে আছে ভিটামিন A ও C এবং প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অন্যদিকে, আদা প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিভাইরাল গুণে সমৃদ্ধ। এই দুটি উপাদান একসঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গাজরের ক্যারোটিনয়েড, পলিফেনল এবং ভিটামিন শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে। আদাও অটোইমিউন রোগে উপশম এনে দেয়, বিশেষ করে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে।

২. চোখের জন্য ভালো
গাজরে আছে বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন A-তে রূপান্তরিত হয়। এটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়াও এতে থাকে লুটেইন, যা চোখকে রক্ষা করে ক্ষতিকর আলোর প্রভাব থেকে এবং বয়সজনিত চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমায়।

৩. হজমের উন্নতি করে
আদা হজমে সাহায্যকারী এনজাইম সক্রিয় করে এবং পেটের গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা কমায়। গাজরের ফাইবার হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করে, মল নরম রাখে ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আদার প্রদাহরোধী গুণাগুণ অন্ত্রে প্রদাহ কমায়।

৪. হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে
গাজর ও আদা—দুটিই রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, রক্তসঞ্চালন ভালো রাখতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর। নিয়মিত গাজরের রস খেলে শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বাড়ে ও চর্বি জমার হার কমে। আদার জিঞ্জারল, শোগাওল প্রভৃতি উপাদান রক্তচাপ ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সহায়তা করে।

৫. ত্বক উজ্জ্বল করে
গাজর ও আদা—দুটির মধ্যেই ত্বক পরিষ্কার রাখার এবং টক্সিন দূর করার গুণ আছে। গাজরের খোসাতে থাকে উচ্চমাত্রার ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের বয়সজনিত সমস্যা ও সূর্যরশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। আদাও ত্বককে ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।

দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। যেকোনো খাদ্য বা স্বাস্থ্য অভ্যাস শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।