ছবি: প্রতীকী
সারাদিন প্রাণবন্ত ও চাঙা থাকতে চাইলে কিছু সহজ দৈনন্দিন অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। শরীর ও মনকে সক্রিয় রাখার জন্য শুধু ঘুম ও খাবার নয়, সঠিক রুটিন মেনে চলাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এমন ছয়টি কার্যকর অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যা অনুসরণ করলে আপনি পুরো দিনজুড়ে কর্মক্ষম ও সজীব থাকতে পারবেন।
প্রথমেই, দিনে ছোট ছোট ভাগে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। তিনবেলার ভারী খাবারের বদলে প্রতি ৩-৪ ঘণ্টা পরপর অল্প পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং হঠাৎ করে শক্তি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। ফল, বাদাম, দই বা শসা-গাজরের মতো স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খেলে পেট ভরবে, আবার শরীরও থাকবে হালকা।
দ্বিতীয়ত, প্রতি ঘণ্টায় কিছুটা নড়াচড়া করা খুবই জরুরি। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে রক্ত চলাচল ধীর হয়ে যায়, যার ফলে ক্লান্তি ও মনোযোগের ঘাটতি দেখা দেয়। প্রতি ঘণ্টায় কয়েক মিনিট হাঁটা, দাঁড়ানো বা হালকা স্ট্রেচিং করলে শরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়ে ও মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছায়, ফলে আপনি সতেজ অনুভব করেন।
তৃতীয়ত, পর্যাপ্ত পানি পান করা দরকার। শরীরে সামান্য পানিশূন্যতাও ক্লান্তি, বিরক্তি ও মনোযোগের ঘাটতির কারণ হতে পারে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করে দিন শুরু করুন, এবং সারাদিন একটি পানির বোতল নিজের কাছে রাখুন। এতে করে আপনি চা-কফি বা চিনিযুক্ত পানীয়ের ওপর নির্ভর না করেই সতেজ থাকতে পারবেন।
চতুর্থত, দিনের শুরুটা একটি পরিপূর্ণ নাশতার মাধ্যমে করুন। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও জটিল শর্করাযুক্ত খাবার খেলে সারা সকাল শক্তি বজায় থাকে এবং হঠাৎ করে খিদে লাগা কমে যায়। ডিম, ওটস, ফলসহ দই কিংবা বাদাম মাখা টোস্ট হতে পারে এক চমৎকার সকালের নাশতা।
পঞ্চমত, সকালের সূর্যালোক গ্রহণ অত্যন্ত উপকারী। সকালবেলায় রোদে হাঁটা বা জানালার ধারে বসলে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি সঠিকভাবে কাজ করে, এবং সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণের মাধ্যমে মন ও মনোযোগ উন্নত হয়। এর প্রভাব সারা দিন টিকে থাকে।
সবশেষে, ঘুমের আগে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন। রাতের বেলা মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভির পর্দার আলো মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণে বাধা দেয়, যার ফলে ঘুম ঠিকমতো হয় না এবং পরদিন ক্লান্ত লাগে। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রাখুন। এর বদলে বই পড়া, ধ্যান বা হালকা সংগীত শুনে মন শান্ত করুন।
এই অভ্যাসগুলো নিয়মিত পালন করলে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙা থাকবেন, কাজের প্রতি মনোযোগ ও আগ্রহও বাড়বে।
সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস
এম.কে.
