ছবি: সংগৃহীত।
তেঁতুল—এই নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে! টক-ঝাল আচার হোক বা তেঁতুল পানি, অনেকের কাছেই এটি লোভনীয় এক স্বাদের উৎস। কিন্তু অনেকেই বলে থাকেন, বেশি তেঁতুল খেলে নাকি "রক্ত পানি হয়ে যায়"। এ কথা কতটা সত্য? আদৌ কি তেঁতুল শরীরের রক্তে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই আমরা কথা বলেছি একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে।
তেঁতুল ও আমাদের খাদ্যাভ্যাস
বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে তেঁতুলের ব্যবহার বহু পুরনো। এটি শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, বরং কিছু ভেষজ গুণও রয়েছে এতে। তেঁতুলে রয়েছে টারটারিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ।
‘রক্ত পানি’—ভয়ের বাস্তবতা কতটুকু?
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ তানজিনা রহমান বলেন, “বেশি তেঁতুল খেলে শরীর কিছুটা পানি শূন্য হতে পারে, কারণ এতে ডাইউরেটিক (মূত্রবর্ধক) উপাদান থাকে। তবে সেটাকে ‘রক্ত পানি হয়ে যাওয়া’ বলা ঠিক না। এটি আসলে একটি প্রচলিত ভুল ধারণা।”
তিনি আরও জানান, “তেঁতুলে থাকা টারটারিক ও সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরের মিনারেল শোষণে সাময়িক বাধা দিতে পারে, যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়। তবে স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে তেঁতুল খাওয়ার মাধ্যমে এমন কোনো ক্ষতি হয় না।”
কে কতটা খেতে পারেন?
পুষ্টিবিদরা সাধারণত পরামর্শ দেন, প্রতিদিন ১০-২০ গ্রাম তেঁতুল বা তেঁতুলজাত খাবার খাওয়া নিরাপদ। যাদের অ্যাসিডিটি, আলসার বা কিডনির সমস্যা আছে, তাদের তেঁতুল খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
উপকারিতাও কম নয়
তেঁতুল হজমে সহায়ক, লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়, শরীর থেকে টক্সিন দূর করে, এমনকি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে বলে দাবি করছেন গবেষকরা।
তেঁতুল খেলে শরীরের রক্ত পানি হয়ে যায়—এ ধারণা পুরোটাই ভুল নয়, আবার পুরোপুরি ঠিকও নয়। পরিমিত পরিমাণে খেলে তেঁতুল শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে অতিরিক্ত খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা থেকে সতর্ক থাকা ভালো।
তাই, খাবেন তেঁতুল—তবে বুঝে শুনে!
নুসরাত
