
ছবিঃ সংগৃহীত
অ্যাক্রিলামাইড—এই শব্দটি অনেকের কাছেই নতুন শোনাতে পারে। কিন্তু এই ক্ষতিকর যৌগটি আমাদের পরিচিত অনেক খাবারের মধ্যেই গোপনে বাসা বেঁধে আছে। মূলত স্টার্চ বা শর্করা জাতীয় খাবারগুলো যখন উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হয়—যেমন ভাজা, বেকিং বা রোস্ট করার সময়—তখন অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হয়।
এই যৌগের সঙ্গে ক্যান্সারের সম্পর্ক এখনো গবেষণাধীন থাকলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ও অতিরিক্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন। রান্নার পদ্ধতিতে সামান্য পরিবর্তন এনে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা কমানো সম্ভব।
নিচে এমন পাঁচটি খাবার উল্লেখ করা হলো যেগুলোতে অ্যাক্রিলামাইড বেশি তৈরি হয়, এবং যেভাবে তা নিরাপদে খাওয়া যেতে পারে—
১. ক্রিসপি স্ন্যাকস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
আলুর চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ও অন্যান্য ডিপ-ফ্রাইড খাবার অ্যাক্রিলামাইড তৈরির শীর্ষে। উচ্চ তাপে ভাজা বা বেক করার সময় আলুর প্রাকৃতিক চিনি অ্যামিনো অ্যাসিডের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে অ্যাক্রিলামাইড তৈরি করে। যত বেশি ভাজা বা বাদামি হয়, তত বেশি ক্ষতিকর হয়। এর বিকল্প হতে পারে সেদ্ধ বা এয়ার-ফ্রায়ারে রান্না করা আলু।
২. প্যাকেটজাত বিস্কুট ও কুকিজ
এই ধরনের খাবার সাধারণত উচ্চ তাপে বেক করা হয় এবং এতে অ্যাক্রিলামাইড ছাড়াও সংরক্ষক, রিফাইন্ড চিনি ইত্যাদি থাকে। চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে অতিরিক্ত ক্রিসপি ও বাজারজাত বিস্কুটের বদলে ঘরে তৈরি বা হালকা বেক করা বিস্কুট খাওয়া ভালো।
৩. পোড়া টোস্ট ও বেশি বাদামি রুটি
টোস্টের সোনালি রঙ আকর্ষণীয় মনে হলেও অতিরিক্ত বাদামি বা পোড়া অংশে অ্যাক্রিলামাইড বেশি থাকে। রুটি হালকা করে টোস্ট করা ভালো এবং পোড়া অংশ বাদ দেওয়াই নিরাপদ। হোলগ্রেইন রুটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং তুলনামূলকভাবে কম অ্যাক্রিলামাইড তৈরি করে।
৪. কফি
হ্যাঁ, কফিতেও অ্যাক্রিলামাইড থাকে। কারণ কফি বিন রোস্ট করার সময় এই যৌগ তৈরি হয়। তবে কফি ত্যাগের প্রয়োজন নেই—পরিমিত পান করলেই চলবে। হালকা রোস্ট কফি বা কোল্ড ব্রুতে অ্যাক্রিলামাইডের পরিমাণ কম থাকে। কফিতে চিনি ও দুধ না মেশানোও উপকারী।
৫. প্যাকেটজাত ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল
কর্ন বা গম থেকে তৈরি কিছু ক্রাঞ্চি সিরিয়াল উচ্চ তাপে টোস্ট বা বেক করা হয়, যা অ্যাক্রিলামাইড উৎপন্ন করে। লেবেল পড়ে কেনা, অতিরিক্ত মিষ্টি সিরিয়াল এড়ানো এবং ওটস বা দালিয়ার মতো প্রাকৃতিক শস্য বেছে নেওয়াই ভালো।
অ্যাক্রিলামাইডের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রান্নার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, অতিরিক্ত ভাজা এড়ানো এবং প্যাকেটজাত খাবার কম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলেই বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।
সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া
নোভা