
জুলাই আন্দোলনের সময় রংপুর নগরীতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে হার্ট অ্যাটাকে নিহত মুদি দোকানি ছমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেফতার করেছে হাজিরহাট থানা পুলিশ।
গ্রেফতার ও মুক্তির দাবিতে যখন শিক্ষক সমাজ এবং শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে সোচ্চার, ঠিক সেই সময় হাজিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আল মামুন শাহকে বদলি করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি জানান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে হাজিরহাট থানার ওসিকে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পরিদর্শক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর মহানগর ডিবির পরিদর্শক রাজিবুল ইসলামকে হাজিরহাট থানার নতুন ওসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি রুটিন বদলির অংশ, কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নয়।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত শিক্ষক মাহমুদুল হকের জামিন চেয়ে রোববার দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ (হাজিরহাট আমলি আদালত) এ আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। বিচারক মো. সোয়েবুর রহমান শুনানি শেষে আগামী মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিন ধার্য করেন।
একই দিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান মো. তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, “সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হককে প্রায় ১০ মাস আগের একটি ঘটনায় যেভাবে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। একজন সম্মানিত শিক্ষককে হত্যার মামলায় আসামি করে তালিকাভুক্ত করা গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা তার সহকর্মীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মুক্তি ও মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি। যদি তাকে সম্মানসহ মুক্তি না দেওয়া হয়, বিভাগ কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।”
শিক্ষক মাহমুদুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম আল মামুন বলেন, “আমরা আদালতে জামিন আবেদন করেছি। শুনানি ২৪ জুন। আমরা আশাবাদী, ন্যায়বিচার পাব। এমনকি মামলার বাদীও জানেন না, মাহমুদুল হককে কেন আসামি করা হলো। এটি পুরোপুরি ষড়যন্ত্রমূলক।”
আদালত প্রাঙ্গণে শিক্ষক মাহমুদুল হকের স্ত্রী মাসুবা হাসান মুন সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আজ ওকে সম্মানের সঙ্গে বাড়ি নিয়ে ফিরতে পারব। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্তে আমরা গভীরভাবে হতাশ।”
সজিব