
.
টার্মিনাল ফাঁকা। ট্রাক থাকে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে। টার্মিনাল ব্যবহার নিয়ে নানামুখী বক্তব্য। টার্মিনালের ইজারাদার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোরবানির ঈদে টার্মিনালের জায়গায় কোরবানির গরুর হাট স্থাপন করেন।
বিশাল জায়গার উপর নির্মিত ট্রাক টার্মিনাল। দেখলে মনে হবে সেটা ফুটবল খেলার মাঠ। কিন্তু বছরের পর বছর সেটি ফাঁকা পড়ে আছে। নগরীর যানজট ও যত্রতত্র পার্কিং এড়িয়ে সড়কের শৃংখলা ফেরাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ৯ একর জায়গা জুড়ে সিলেট কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০০ ট্রাক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রাক টার্মিনালটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালে। উদ্বোধনের পর সেখানে ট্রাক পার্কিং করতে দেখা যায়নি কখনও। এ নিয়ে নানান অজুহাত সমস্যা। চালক-মালিকরা বলেন গাড়ি পার্কিং করে চালক ও হেলপারদের খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন হয়। গাড়ির নানান ধরনের যান্ত্রিক সমস্যা থাকে, যা পার্কিং অবস্থায় সেরে নিতে হয়। এ ধরনের সুযোগ নেই এই টার্মিনালে। তারা বলছেন টার্মিনাল নির্মানের প্রথম ধাপেই সেটার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ ছিল। নেই মসজিদ, বিশ্রামের জায়গা, গোসল ও খাবারের ব্যবস্থাও নেই সেখানে। নেই কোনো ওয়ার্কশপও। এতে করে কোনো ট্রাক চালক এই টার্মিনালে যেতে চান না। বিশেষ করে খাবারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কেউই টার্মিনালে যেতে আগ্রহী নয়। টার্মিনালের স্থান নির্বাচন নিয়েও মালিক চালকদের আপত্তি রয়েছে। তাদের অনেকেই বলছেন সিলেটের বাইরে থেকে ট্রাক আসার পথে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের চন্ডিপুল এলাকার আশপাশে টার্মিনাল স্থাপন করা হলে সেটি ব্যবহারের জন্য সুবিধা হতো। যাতায়াতের পথে টার্মিনাল ব্যবহারের সুবিধা থাকা উচিত ছিল। এতে সময় ও জালানি খরচ বাঁচতো। বর্তমানে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইরচক এলাকায় অবস্থিত ট্রাক টার্মিনালে যাতায়াত অনেকটা দূরত্বে থাকায় চালকদের অনীহা। ট্রাক টার্মিনালটি উন্মুক্ত হলেও সড়ক থেকে ট্রাক পার্কিং বন্ধ হচ্ছে না। নগরীর চন্ডিরপুল ও কদমতলীসহ বিভিন্ন সড়কে আগের মতো যত্রতত্র পার্কিং করে রাখা হচ্ছে শত শত ট্রাক। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। আর ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) বলছে, টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি পরিচালনার জন্য ইজারাও দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজ রহমান বলেন, ট্রাক টার্মিনালটি নির্মাণ কাজ আমরা করে দিয়েছি। এটি পরিচালনার জন্য ইজারাও দেওয়া হয়েছে। এখন ট্রাক টার্মিনালের জন্য যে সব সুবিধার কথা বলা হচ্ছে তা দেখবে ইজারাগ্রহিতা প্রতিষ্ঠান। তিনি আরও বলেন, ‘ইজারা চুক্তি অনুযায়ী তাদের চাহিদার আলোকে কিছু কাজ আমরা করে দেব। সেজন্য বাজেট লাগবে। সিসিকের তহবিলে পর্যাপ্ত বাজেট নেই। বাজেট হলেও আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখব। আর নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ দেখবে।’
এ বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া বলেন, ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ হয়েছে, উদ্বোধনও করা হয়েছে। কিন্তু এর কাজ এখনও শেষ হয়নি। মসজিদ নেই, নামাজের জায়গাও নেই। তা ছাড়া বিশ্রামের জায়গা, গোসলের ও খাবারের ব্যবস্থা নেই। একটি ওয়ার্কশপও নেই সেখানে। এ অবস্থায় চালকরা যেতে চান না সেখানে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বারবার বলে আসছি যে আমাদের জন্য ট্রাক টার্মিনালের কাজগুলো করে দিতে। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেই। আমরা বলেছি, ট্রাক টার্মিনালের কাজগুলো করে দিলে আমরা টার্মিনালের ভিতরে চলে যেতাম। আর কেউ রাস্তায় দাঁড়াত না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বারবার আমাদের বলে রাস্তাঘাটে ট্রাক থাকে কেন? আমরা কি করব। সুবিধা না থাকলে তারা (ড্রাইভাররা) সেখানে কেন যাবে।
প্যানেল